সীতাকুণ্ডে পুলিশের ধাওয়া থেকে পালিয়ে বাঁচতে গিয়ে গুরুতর আহত চয়ন দাশ (২৫) ৬ দিন চিকিৎসার পর আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে মারা যান। গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়। চয়ন উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কেদারখিল এলাকার দীলিপ কুমার দাশের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ প্রতিনিয়িত ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে ওঁৎ পেতে থাকে যানবাহনকে ধরার জন্য। গত ১৫ এপ্রিল শেখপাড়া বাইপাস এলাকায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিক্সা সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৫ জন যাত্রী নিয়ে শেখ পাড়া এলাকায় যাচ্ছিল। এই সময় অটোরিক্সাটি পৌর এলাকার শেখপাড়া বাইপাস এলাকায় গেলে পুলিশ গাড়িটিকে সিগন্যাল দেয়। এসময় পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে সিএনজি অটোরিক্সাটি সজোরে সড়ক বিভাজনে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্ঠা করে। এসময় চয়ন ও আরেক জন যাত্রী গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে। গাড়িটি ১০০ গজ দূরে বাইতুল মাজারের সামনে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। এসময় পুলিশ চয়নকে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করিয়ে চলে যায়। এসময় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এসময় তার দুইটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হয়। ৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জালড়ে গতকাল বুধবার বিকেলে সে মারা যায়। দুর্ঘটনার সময় তার পকেট থেকে সমিতির ২৬ হাজার টাকা পুলিশ নিয়ে যায় বলে স্থানীয় সূত্র অভিযোগ করে।
এই বিষয়ে সিএনজি অটোরিক্সায় থাকা যাত্রী ও একই এলাকার বাসিন্দা অরুন দেব নাথ বলেন, ওই দিন তিনিসহ আরো ৪ জন যাত্রী শেখপাড়া যাচ্ছিলেন। পুলিশ অতর্কিত ভাবে গাড়িটিকে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। এসময় গাড়ির চালক পুলিশকে টাকা দেয়ার ভয়ে পালাতে চেষ্টা করে। পালিয়ে যাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করে চালাতে গিয়ে সে সড়ক বিভাজনে ধাক্কা দেয়। এসময় চয়ন ও আরেক যাত্রী গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে। অন্য যাত্রীদের নিয়ে মাজার এলাকায় এলে গাড়িটি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ওই এলাকায় পুলিশ সিএনজি অটোরিক্সা দাঁড় করিয়ে চালকদের কাজ থেকে টাকা নেয় বলেও দাবি করেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। এই বিষয়ে পৌরসভা এলাকার টি এস আই মো. নজরুল বলেন, তিনি সন্ধ্যা সাতটার পর তিনি ডিউটিতে থাকেন না। ওই দিন ওই জায়গায় হাইওয়ে পুলিশ বা থানা পুলিশ ছিল বলে দাবি করেন। ওই দিনের ঘটনায় চয়ন দাশের মৃত্যু হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। এই বিষয়ে কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট ফাহামি নিজামুল বলেন, ওই এলাকায় হাইওয়ে পুলিশের কোন টিম থাকে না। তাছাড়া পৌরসভা এলাকায় সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল করে। এই ঘটনাটি তা নজরে নাই বলে দাবি করেন তিনি।
এই ঘটনায় সীতাকুণ্ড মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের কারণে যদি এই ঘটনাটি হত তাহলে তারা থানায় অভিযোগ করত। প্রতি রাতে থানার একটি মোবাইল টিম সীতাকুণ্ড উত্তর বাসপাস থেকে বড় দারোগাহাট এলাকা পর্যন্ত ডিউটি করে বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরো বলেন, গাড়ি যেহেতু জব্দ হয়নি সেহেতু পুলিশ এই ঘটনাটি ঘটায়নি বলে দাবি করেন তিনি।
পাঠকের মতামত: