নিজস্ব প্রতিবেদক :: পার্বত্য চট্টগ্রামের (বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি) সব অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম ৭ দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রুলসহ এই আদেশ দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রুলে বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বিভিন্ন স্থানে লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সব ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে অবৈধভাবে পরিচালিত ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা পরিচালনার জন্য ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ধারা ৪.৫.১৪.১৮ অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়ার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। এসব ইটভাটায় পাহাড় কেটে মাটি কাঁচামাল হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। এছাড়াও বনের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হলে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) একটি রিট পিটিশন দায়ের করে।
শুনানিতে বাদী পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ৪ ধারা অনুসারে কোনো ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারবে না। চালালে ধারা ১৪ অনুসারে দুই বছরের সাজার বিধান আছে। তা সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সব ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
তাছাড়া উক্ত আইনের ৫ ধারায় পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং তা করলে একই আইনের ১৫ ধারায় দুই বছরের সাজার বিধান রয়েছে। তারপরেও পাহাড়ের মাটি ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
এ কারণে পার্বত্য এলাকার অনেক পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রশাসনের চোখের সামনে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটাগুলো পরিচালিত হচ্ছে- যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
আদালত শুনানি শেষে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরসহ অন্যদেরকে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে পরিচালিত সকল লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা আগামী সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতের আদেশ প্রতিপালনের প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত অপর এক আদেশে লাইসেন্স ব্যতীত পরিচালিত সব ইটভাটার তালিকা আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে প্রস্তুত করে আদালতে এভিডেভিট দাখিলের জন্য তিন জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম এলাকার পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালকসহ অন্যদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাঠকের মতামত: