ঢাকা,শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

পরীমনির হাতে মেহেদী দিয়ে লেখা ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’, কার উদ্দেশে এ বার্তা?

অনলাইন ডেস্ক ::  মাদক মামলায় গ্রেফতারের পর টানা ২৬ দিন বন্দিজীবন কেটেছে পরীমনির। আলিশান ফ্ল্যাটে বিত্তবৈভব যার নিত্যসঙ্গী তার কিনা থাকতে হয়েছে লাল দেয়ালের ঘেরাটোপে। খেতে হয়েছে সাধারণ বন্দিদের খাবার।

এই সময়টা ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির জীবনের বড় একটি বাঁক। জীবনকে ওলট-পালট করে দিয়েছে কারাগারের দিনগুলো।

কখন মুক্ত হবেন, মুক্ত হাওয়া নেবেন সেই অপেক্ষায় হাঁসফাঁস করছিলেন পরীমনি। অবশেষে প্রতীক্ষিত মুহূর্ত। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় কাশিমপুর মহিলা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসেন পরীমনি। তার পরনে ছিল সাদা টি-শার্ট, মাথায় সাদা ওড়না, চোখে কালো রোদচশমা।

ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে যারা কারাফটকে অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান পরীমনি। কারাফটক থেকে যখন সাদা গাড়ি বের হলো, সানরুফ খুলে উঁচু হয়ে দাঁড়ালেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। হাত নেড়ে ভক্তদের ভালোবাসার জবাব দিলেন। কিন্তু অনেকের চোখ আটকে গেল হাতের তালুতে আঁকা একটি লেখায়— ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’।

মেহেদী দিয়ে লেখা এই লেখাটি অনেকেরই চোখে পড়ে। হাতে লাভ চিহ্নও ছিল। পরীমনির এই বার্তা কাদের জন্য সেই প্রশ্ন উঠেছে।বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চর্চা শুরু হয়ে গেছে। উপস্থাপক রুম্মান রশিদ খান লিখেছেন— ‘দুধের মাছি/সুসময়ের বন্ধু যারা; তাদের ভালোবাসার আর দরকার নেই পরীর।’

এমন বার্তার কারণ হিসেবে মডেল হৃদি উল্লেখ করেছেন, ‘যারা পরীমনির জন্মদিনে ফ্রিতে গিয়ে ফ্রি ফ্রি খেয়ে এসেছেন, আর সেলফি তুলে গেছেন; তাদের বোঝানো হয়েছে এটি।’

এদিকে মুক্তির পর পরীমনির অবস্থা জানতে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অবশ্য আগেই পরীমনির আইনজীবী জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এখন নায়িকা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন না। একটু সময় নিয়ে রিফ্রেশ হয়ে কথা বলবেন। তাই জানা যায়নি, তার ওই বার্তাটি কাদের জন্য লেখা।

বুধবার সকাল ৯টা ২১ মিনিটে আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভীর কাছে পরীমনি হস্তান্তর করে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ ।

মাদক মামলায় ২৭ দিন পর জামিন পেলেন এই শীর্ষ নায়িকা। পরীমনিকে নিতে কারাফটকে উপস্থিত ছিলেন তার খালু মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ ৬-৭ জন আত্মীয়। পরে সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে গাড়িতে পরীমনিকে নিয়ে কারাফটক ত্যাগ করেন তারা।

এর আগে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে পরীমনির জামিনের আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। নারী, অভিনেত্রী ও অসুস্থতা বিবেচনায় ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় তিনি পরীমনির জামিন মঞ্জুর করেন।

গত ৪ আগস্ট সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। মাদক মামলায় তিন দফায় সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি।

৪ আগস্ট বিকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন পরীমনি। এ সময় র্যাবের পক্ষ থেকে পরীমনিকে তার বাসায় অভিযানের কথা জানানো হয়। কিন্তু তিনি লাইভে এসে মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালানো শুরু করেন।

লাইভে পরীমনি বলেন, আমি ঘুমাইতেছিলাম। বাসার নিচে মেইনগেটে সব ভাঙচুর করে তারা ওপরে চলে আসছে। এখন বাসার গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। বারবার কলিংবেল বাজাচ্ছে। পুলিশসহ কেউ শুনছে না, আমি সবাইকে ফোন করলাম, কেউ আসছে না।

মরে গেলে আসবেন ভাই? তিনি আরও বলেন, আমার মনে হচ্ছে এরা ডাকাত। একেক জনের একেক রকমের চেহারা। এরা যদি ডাকাত হয় কী করবেন? আমি এটার ভয় করছিলাম। আমি আজ লাইভ কাটব না।

এখানে থানা থেকে আসতে কতক্ষণ লাগে? মানুষ কি মরে যাবে? তারা নাকি কেউ জানে না, কোন থানা থেকে আসছে, সিআইডি না র্যাব কেউ কিছু বলতে পারছে না।

পরীমনি সবার উদ্দেশে আরও বলেন, আমি বুঝতেছি না আমি মরে গেলে আসবেন? আমি তো হার্টআট্যাক করব। ব্রেনস্ট্রোক করে মরে যাব। এটা একদম টর্চার। লাইভে থেকে আলোচিত এই চিত্রনায়িকা কারও একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

তখন তাকে বলতে শোনা যায়, আমি মরে যাব। আর পৃথিবী দেখব না! আমি লাইভ কাটব না। আমি দেখিয়ে মরব। আমার সঙ্গে কেউ কিছু করে পার পাবে না। আর মেরে ফেললে তো কোনো কিছু করার নেই।

২০১৪ সালে সিনেমায় ক্যারিয়ার শুরু করা পরীমনি এ পর্যন্ত ৩০টি সিনেমা ও বেশ কয়েকটি টিভিসিতে অভিনয় করেছেন। পিরোজপুরের মেয়ে পরীমনিকে চলচ্চিত্র জগতে নিয়ে আসেন প্রযোজক রাজ।

পাঠকের মতামত: