বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী সরকারের দুঃশাসন এবং খুন, গুম, হামলা, মামলায় জর্জরিত এখন দেশের মানুষ। সবাই জঙ্গি আতঙ্কে ভীত। এদের থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায়।
শনিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইঞ্জিনির্য়াস ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ম কারামুক্তি দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘যেহেতু বিএনপিই দেশে একদলীয় বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলো। তাই আবারো অলিখিত বাকশাল সরকারের হাত থেকে দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব বিএনপিরই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আবদ্ধ ঘরে বসে যত স্লোগান, আলোচনা সভা করি না কেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত হতে হবে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই ফ্যাসিস্ট অনৈতিক সরকারকে বিদায় করে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কারণ নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই তারেক রহমান বীরের বেশে বাংলাদেশে আসতে পারবে।
বিনা ভোটে ক্ষমতায় বসা আওয়ামী লীগ নৈতিকভাবে ভেতরে ভেতরে দুর্বল মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারেক রহমান বিএনপির ভবিষ্যত কান্ডারি, তাই ক্ষমতাসীনদের তাকে এতো ভয়। খালেদা জিয়া রাজপথে নামলে গণঅভূত্থান ঘটবে তাই তাঁকে এতো ভয়।
তিনি আরও বলেন, জিয়া পরিবার ষড়যন্ত্রের শিকার। সেই ষড়যন্ত্রের প্রথম শিকার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আর এখন শিকার হচ্ছেন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান।
‘১/১১ সরকারের টার্গেট ছিলো তারেক রহমান। তাই হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পীতভাবে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। আজ তারেক রহমান ১/১১ সরকারের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগ এখন যেভাবে কারাগার বানিয়ে রেখেছে সেই কারাগারে আমাদের সঙ্গে তিনিও বন্দি রয়েছেন।’-যোগ করেন বিএনপির এই নেতা।
মোশাররফ হোসেন বলেন, ১/১১ সরকার যে উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিলো সেই ধারাবাহিকতায় এখন আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। কারণ এই আওয়ামী লীগের প্রধানেই বলেছিলেন, এই ১/১১ সরকার আমাদের (আওয়ামী লীগ) আন্দোলনের ফসল।
এ সময় তিনি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে তারেক রহমানের আসার পথ নির্বিঘ্ন করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ।
বিএনপিকে সুসংগঠিত করা ছাড়া সরকার পতন সম্ভব নয় মন্তব্য করে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, যারা সরকারে আছে তারা রক্ত ছাড়া আর কিছু চেনে না। হত্যা, গুম, খুন ছাড়া তাদের কোনো কাজ নেই।
তিনি বলেন, ‘দানব সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন রুমের মধ্যে থেকে হবে না। সুসংগঠিত দল ছাড়া এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটানো যাবে না। দলকে সুসংগঠিত করতে পারলে আন্দোলন সফলতা লাভ করবে এবং তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবে।
অত্যাচার করে বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপিকে সাময়িকভাবে দুর্বল করা যাবে, কিন্তু নিঃশেষ করা যাবে না। এই বিএনপি ঘুরে দাঁড়াবে এবং আবার ক্ষমতায় আসবে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে আলোচনা বক্তব্য সভায় দেন- বিএনপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বারিস্টার আমিনুল হক, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শামসুজ্জামান দুদু, অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সুকোমল বড়ুয়া, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।
পাঠকের মতামত: