নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঢাকায় অঘোষিত কারফিউর মতো অবস্থা জারি করে সরকার জনগণকে বাদ দিয়েই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা দিবসের দিন বাংলাদেশের যে অবস্থা বিশেষ করে ঢাকা শহরের, এটা আমাদের কারও কাছে প্রত্যাশিত নয়। আমরা সারা শহর দেখলাম একটা অঘোষিত কারফিউর মতো রয়েছে এবং জনগণের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনগণকে বাদ দিয়েই এই দিনটি সরকার উদযাপন করছে। আমরা আজকে (শুক্রবার) জাতীয় স্মৃতিসৌধে যেতে পারিনি। জেলার নেতৃবৃন্দ সেখানে প্রতীকীভাবে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
শুক্রবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার অংশ হিসেবে সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। যে কারণে নেতাকর্মীরা জিয়াউর রহমানের মাজারে যেতে পারেননি। পুলিশের অনুমতি নিয়ে দলের মহাসচিবের সঙ্গে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করার যে কমিটি ছিল তাদের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি ছিল। কিন্তু সে কর্মসূচি আমরা পালন করতে পারছি না। তিনি বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে আমাদের সমাবেশসহ বাইরের কর্মসূচিগুলো বাতিল করেছি। আজকে ভয়ংকরভাবে করোনা আগ্রাসী ভূমিকা নিয়ে বাংলাদেশে আক্রমণ শুরু করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার সেদিকে উদাসীনতা দেখাচ্ছে। তার মূল কারণ হচ্ছে তারা বিদেশি মেহমানদের নিয়ে ব্যস্ত আছে। দেশের মানুষের কী হবে- কী হবে না, সে বিষয়ে তাদের খুব বেশি আগ্রহ আমরা দেখছি না।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বন্ধু দেশের সঙ্গে অমীমাংসিত যেসব সমস্যাগুলো রয়েছে, বিশেষ করে কোটি মানুষের জীবন-মরণের সমস্যা পানি, অভিন্ন নদীগুলোর পানির হিস্যা সেখানে কোনো সমাধান হয়নি। বার বার করে বলা হয়েছে তিস্তা নদীর পানির কথা। ১০ বছর আগে বলা হয়েছে এই নদীর পানি হিস্যার সমাধান করতে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো চুক্তি হয়নি। অথচ আমাদের সরকার কিন্তু একতরফাভাবে ফেনী নদীর পানি দিয়ে দিয়েছে, অন্যান্য বিষয়গুলো তারা করছে। আজকে সীমান্তে হত্যা বন্ধ হয়নি। আমাদের যে কানেকটিভিটি হচ্ছে তাতে আমাদের কী লাভ হচ্ছে- তা জনগণকে জানানো হয়নি। তারপরও আমরা বলতে চাই, আমরা সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। কিন্তু কেউ আমাদের প্রভু হোক এটা আমরা কখনও চাই না, বাংলাদেশের তা মানুষ মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে এদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে। তার ঘোষণায় অনুপ্রাণিত হয়ে সে সময়ের জনগণ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে দুর্ভাগ্যজনকভাবে জনগণের যে আশা আকাঙ্ক্ষা ছিল তা পূর্ণ হয়নি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশের অবৈধ দখলদার সরকারের হাতে তিনি বন্দি রয়েছেন। আমাদের এই স্বাধীনতার অর্জন এটাই যে, আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও স্বাধীন হইনি। আমরা নিজেদের স্বাধীন বলতে পারি না। এদেশের মানুষের স্বাধীনতা বিপন্ন হয়েছে। আমরা শৃঙ্খল মুক্ত হওয়ার জন্য সংগ্রাম করছি। আজকের এই দিন আমরা শপথ নিয়েছি আমরা এই দেশকে শৃংখল মুক্ত করব। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে অবশ্যই মুক্ত করব। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনব।যুগান্তর
পাঠকের মতামত: