ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

জেলা বিএনপির সম্মেলন হচ্ছে না!

index2নিউজ ডেস্ক ::

মার্চ মাসে অনুষ্টিতব্য বিএনপির জাতীয় সম্মেলনের আগে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সম্মেলন হচ্ছে না। মেয়াদউত্তীর্ণ হলেও সম্মেলন না হওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে না নতুন নেতৃত্ব। তবে জেলা বিএনপির নেতারা সম্মেলন কর কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। এভাবে কমিটি ঘোষণার ধারাও থমকে আছে অনেক দিন। সম্প্রতি ৫টি উপজেলার কমিটি ঘোষণা করা হলেও আরো ৫টি উপজেলা ও তিনটি পৌরসভায় নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। দলে নেই তেমন সাংগঠনিক তৎপরতা। কেন্দ্রিয়ভাবে কোন কর্মসূচী ঘোষিত হলে জেলা কার্যালয়েই সীমাবদ্ধ থাকে কার্যক্রম। উপজেলা পর্যায়েও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২০ নভেম্বর কক্সবাজার স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির তৎকালিন যুগ্ম মহাসচিব সেলিমা রহমান। তিনি সভাপতি পদে শাহজাহান চৌধুরীর নাম ঘোষণা করেন। এরপর সাধারণ সম্পাদক পদে কক্সবাজার আদালতের পিপি সরকারি কৌঁসুলি শামীম আরা স্বপ্নার নাম ঘোষণা করলে শুরু হয় হইচই ভাংচুর। পরবর্তিতে সম্মেলন পন্ড হয়ে যায়। এর বিরোধিতা করে বিএনপির অপর পক্ষ কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের তৎকালিন সাংসদ লুৎফর রহমানকে সভাপতি এবং কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাংসদ আলমগীর ফরিদকে সাধারণ সম্পাদক করে আরেকটি পাল্টা কমিটি ঘোষণা দেন। এরপর থেকে দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি জেলা শহর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে আসছিল। গত পাঁচ বছরে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও করে একাধিক।
দ্বিধাবিভক্ত দুই দলের নেতারা গত ২০১৪ সালের ২১ মে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে বসে দলীয় কোন্দল নিরসনের উদ্যোগ নেন। এরপর একই বছর ৩১ মে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ (বর্তমানে ভারতের শিলংয়ে) ও লুৎফর রহমান কাজল বৈঠক করে দুই গ্রুপের দ্বন্দের অবসান ঘটান। এরপর জেলার ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত ১০ মার্চ রাতে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমদ নিখোঁজ হলে সব পরিকল্পনা পাল্টে যায়। আর এগোতে পারেনি বিএনপি।
সুশিল সমাজের প্রতিনিধি কমরেড গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, ৩ বছরের জন্য কমিটি গঠিত হলেও তারা দায়িত্বপালন করে ১৩/১৪ বছর। যার ফলে অনেক নতুন প্রতিভা রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ে। আমরা চাই যথা সময়ে সম্মেলন হলে নতুন রাজনৈতিক নেতার সৃষ্টি হবে। কেউ ক্ষমতা কুক্ষিগত করে  রাখতে পারবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির একজন সাবেক নেতা জানান, জেলা বিএনপির সম্মেলন করার কোন পরিকল্পনা নেই বর্তমান কমিটির। তারা সম্মেলন না করেই আরো কয়েক বছর স্বপদে বহাল থাকতে চায়। বর্তমান নেতৃত্ব সরকার বিরোধী কোন কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। এমনকি দলকেও তেমন সু-সংগঠিত করতে পারেনি। অবস্থা দৃষ্টে মনে হয় বিভক্ত বিএনপির চেয়ে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি অনেক দুর্বল। শুধু মাত্র প্রতিদ্বন্দীদের ঠেকাতেই নাম মাত্র ঐক্য করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী জানিয়েছেন জাতীয় সম্মেলনের আগে জেলা সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে। বিগত ৭ বছর ধরে আমরা সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রাম চালিয়ে আসছি। রাজনৈতিক ব্যস্ততার কারণে উপজেলা ও পৌর কমিটিগুলোর সম্মেলন শেষ করা যায়নি। এরপরও কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা আসবে সেভাবেই এগিয়ে যাবে বিএনপি। অবশ্যই আমরা সম্মেলন করতে চাই। রাজনৈতিক সহঅবস্থানের মাধ্যমে একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হউক সেটাই আমরা কামনা করি।

পাঠকের মতামত: