চট্রগ্রাম প্রতিনিধি :: চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনে নতুন যোগদান করা জেলা প্রশাসকের মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করার অপরাধে গ্রেপ্তার হওয়া মো. মোজাম্মেল হক (৪৩) নামের এক প্রতারককে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল সোমবার মহানগর হাকিম আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে রোববার দিবাগত রাতে তাকে সদরঘাট থানার কামাল গেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
এদিকে গ্রেপ্তার প্রতারক মোজাম্মেলের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার প্রতারক কর্ণফুলী উপজেলার চরলক্ষ্যা ৩নং ওয়ার্ডের হক সাহেবের বাড়ির হাজী আবদুল হকের ছেলে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সূত্রে জানা যায়, গত ২ ফেব্রুয়ারি মর্জিনা আকতার নামের এক ভুক্তভোগী নারীকে ফোন করে তার ছেলেকে নগরীর মুসলিম হাইস্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন প্রতারক মোজাম্মেল। সে ভুক্তভোগীর কাছে নিজেকে ২৫তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেন।
এভাবে ২-৩ দিন কথা বলার পর একপর্যায়ে ছেলেকে মুসলিম হাইস্কুলে ভর্তি করানোর জন্য ১৬ হাজার টাকা দাবি করেন। পরবর্তীতে তাকে নির্ধারিত টাকা দিয়ে দিলে সে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের স্বাক্ষরিত ভুয়া কাগজপত্র দেন। মর্জিনা জেলা প্রশাসকের সুপারিশ ও স্বাক্ষরযুক্ত কাগজ নিয়ে মুসলিম হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলে তিনি জেলা প্রশাসন থেকে এমন কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগাযোগ করার পর মর্জিনা আকতার জানতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
এরপর বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসলে ঘটনায় জড়িত জামাল নামের এক প্রতারককে আটক করা হয়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেয়। ওইসময় মোজাম্মেল হক পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এরপর মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করেন ভুক্তভোগী মর্জিনা আকতার।
পুলিশ জানিয়েছে, মোজাম্মেলকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে সচিব ও সাংবাদিক পরিচয়ের ভুয়া ভিজিটিং কার্ডও উদ্ধার করে পুলিশ। কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন জানান, জেলা প্রশাসকের স্বক্ষর জালিয়াতি করে পলাতক আসামি ভুয়া বিসিএস পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। তার ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
রিমান্ডে এনে প্রকৃত ঘটনা উৎঘাটন করা হবে। ওসি বলেন, ‘তিনি একটি চ্যানেলের ব্যুরো চিফ সেজেছেন। এ প্রতারক একব্যক্তিকে নৌবাহিনীতে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে ৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে দিয়েছেন। এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। সে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন লোকের সাথে নানান কৌশলে প্রতারণা করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে ২০০৮ সালে বোয়ালখালী থানাতেও একটি প্রতারণা মামলা হয়েছে।’
পাঠকের মতামত: