ঢাকা: আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে আর্থিক খরচের জন্য কারও কাছ থেকে চাঁদা নিতে হবে না বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের নিজস্ব যে ফান্ড রয়েছে তা থেকেই সম্মেলনের আর্থিক খরচ মেটানো যাবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (০৩ অক্টোবর) মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় কথা প্রসঙ্গে সম্মেলনের বিষয়টি উঠলে তিনি এসব কথা জানান। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রীসভার এ নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র জানায়, মন্ত্রীসভার বৈঠক শেষে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনের প্রসঙ্গটি তোলেন। এসময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের সম্মেলনটা আপনি করে (অর্থনৈতিক দিক ইঙ্গিত করে) দেন।
এ কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য কারও কাছে কিছু চাওয়ার দরকার হবে না। আমাদের দলের ফান্ড (তহবিল) আছে।
দলের নিজস্ব ফান্ড দিয়েই সম্মেলনের খরচ হয়ে যাবে বলেও আওয়ামী লীগ সভাপতি মন্তব্য করেন।
আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সম্মেলনকে ব্যাপক জাকজমক ও উৎসবমুখর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সে অনুযায়ী দলের জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি অতিথিসহ ৩০ হাজারের বেশি কাউন্সিলর ও ডেলিগেট যোগ দেবেন। এছাড়া উদ্বোধনী অধিবেশনে কাউন্সিলর-ডেলিগেটের বাইরেও দলের হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকবেন। সব মিলিয়ে ৫০ হাজারের বেশি নেতা-কর্মীর সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশে দৃষ্টিনন্দন সাজসজ্জার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। বিশাল আয়োজনের এ সম্মেলন সম্পন্ন করতে আর্থিক ব্যয়ের পরিমাণও দাঁড়াবে বড় অঙ্কের। তবে এখন পর্যন্ত সম্মেলনের আর্থিক বাজেট চূড়ান্ত করা হয়নি। সম্মেলনের প্রস্তুতির কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, এই সম্মেলনে তিন থেকে চার কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দলের সম্মেলনের বাজেট প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও সম্মেলন প্রস্তুতি উপ-কমিটির আহ্বায়ক কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, এখনও বাজেট চূড়ান্ত করা হয়নি। সম্মেলন প্রস্তুতি উপ-কমিটিগুলোর মধ্যে বাজেট নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। দ্রুতই আমরা নেত্রীর (সভাপতি শেখ হাসিনা) সঙ্গে আলোচনা করে আর্থিক বাজেট ঠিক করে ফেলবো।
সূত্র আরও জানায়, সোমবারের মন্ত্রীসভার এ বৈঠকে সম্প্রতি টঙ্গিতে টাম্পাকো দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের এবং সদ্যপ্রয়াত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের স্মরণে শোক প্রস্তাব নেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টাম্পাকোর পাশে কারখানার কেমিক্যালের গুদাম থাকার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দেরি হয়। তা না হলে হয়তো এতগুলো প্রাণ যেতো না।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সৈয়দ শামসুল হকের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বিদেশে যাওয়ার আগে আমি তার সঙ্গে দেখা করেছি। তখন ভালোই মনে হয়েছে। কথা বলে মনে হয়নি, তিনি এতো তাড়াতাড়ি চলে যাবেন। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
পাঠকের মতামত: