ঢাকা,শনিবার, ২ নভেম্বর ২০২৪

চৌফলদন্ডী পোকখালী উপকূলে বিট কর্মকর্তা শরীফুলের জমিদারী !

আতিকুর রহমান মানিক ::

কক্সবাজার সদর উপজেলার উপকূলীয় পোকখালী ও চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের সমুদ্রতীরবর্তী এলাকায় যেন জমিদারী কায়েম করেছেন উপকূলীয় বন বিভাগের এক কর্মকর্তা। এসব এলাকার চিংড়ি ঘের মালিক, মৎস্য ব্যবসায়ী, কাঁকড়া ব্যবসায়ী, সাধারন জেলে ও চিংড়ি চাষীরা প্রতিনিয়ত তার কাছে আর্থিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে। জমিদারী খাজনার মতই এদের কাছ থেকে নানা বাহানায় টাকা আদায় করছেন গোরকঘাটা উপকূলীয় বনবিট কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম। চৌফলদন্ডী ও পোকখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার জনগন থেকে গত কয়েক মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শরীফুল ইসলাম।

প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, গোরকঘাটা উপকূলীয় বন বিটের অধীনস্থ পোকখালী ও চৌফলদন্ডীর উপকূলীয় এলাকায় প্রায় এক হাজার একর চিংড়ি ঘের রয়েছে। সরকার থেকে লীজ নিয়ে এসব ঘেরে চিংড়ি ও কাঁকড়া চাষ করে আসছেন স্হানীয় জনগন ও মৎস্য চাষীরা। এসব ঘেরে উৎপাদিত চিংড়ি রপ্তানী করে প্রতিবছর শত কোটি টাকার মূল্যবান বৈদেশিক মূদ্রা আয় হচ্ছে। চিংড়ির পাশাপাশি সাথী ফসল হিসাবে উৎপাদিত অন্যান্য মাছ ও কাঁকড়া স্হানীয় জনগোষ্ঠীর আমিষের চাহিদা পূরন করছে। এছাড়াও এলাকার শত শত জনগনের কর্মসংস্থান হচ্ছে এসব চিংড়ি খামারে।

ঘের মালিকরা জানান, গত এপ্রিল – মে মাসে চিংড়ি উৎপাদন মৌসূমের আগে চিংড়ি ঘের না করতে নিষেধ করেন বিট কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম। এসব ঘেরের লীজ বাতিল হয়েছে ও বনবিভাগের জমি দাবী করে ঘের মালিকদের থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে।

এরপর উপরস্হ কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে চৌফলদন্ডী ও পোকখালী ইউনিয়নের উপকূলীয় এলাকার প্রায় তিন ডজন চিংড়ি ঘের মালিকদের কাছ থেকে  ৪০/ ৪৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় শরীফুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঘের মালিকরা জানান, টাকা না দিলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন বনবিট কমকর্তা শরীফুল ইসলাম। তার হুমকিতে চলতি মৌসূমে অনেক চিংড়ি ঘেরে পোনা ছাড়তে পারেননি উদ্যোক্তাগন।

এ ছাড়াও চরজাল, বেহুন্দিজাল ও এমনকি সাগরে জাল পাততেও তাঁকে মাসোহারা দিতে হয় বলে জানিয়েছেন বাদশা, হারুন, মনির, শাহেদ ও মোঃ হোছনসহ আরো অনেক জেলে।

বেড়িবাধ সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী বানভাসী জলবায়ু উদ্ধাস্তু জাফর, রহিম, ওসমান ও কালাপুতুসহ আরো ১০/২০ জন দরিদ্র জনগন বলেন, উচ্ছেদের ভয় দেখিয়ে পরিবারপ্রতি ৫ হাজার থেকে দশ হাজার টাকা আদায় করেছেন শরীফুল।

উপকূলীয় জমিতে এভাবেই “জমিদারী” কায়েম করেছেন উপকূলীয় বনবিট কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম। তার অনৈতিক আবদার ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন চিংড়ি চাষী, মৎস্যজীবি ও প্রান্তিক জনগন।

উপরোক্ত ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত বনবিট কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ব্যাপারটি কৌশলে এড়িয়ে যান ও তার সাথে দেখা করতে বলেন। কিন্তু প্রতিবেদক সুনির্দিষ্ট বক্তব্য চাইলে কারো কাছ থেকে টাকা নেননি বলে দাবী করেন শরীফুল ইসলাম।

পাঠকের মতামত: