নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়া উপজেলা ভুমি অফিসের সামনে দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছেন একাধিক জালিয়াত চক্র। এই চক্রের বেশির সদস্য জমি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবাখাতে জালিয়াতির মাধ্যমে জমির নকল কাগজ বানানো কাজে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আবার ভুমি অফিসের সামনে জড়িতদের অনেকের আছে কম্পিউটার দোকানের আঁড়ালে জাল কাগজ তৈরীর আস্তানা। বিষয়টি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পেরে গত ২৬ আগস্ট চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সৈয়দ সামসুল তাবরীজ এর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত উপজেলা ভুমি অফিসের সামনে অভিযান চালিয়ে পাঁচটি কম্পিউটার দোকান থেকে তিনটি ল্যাপটপ ও সাতটি কম্পিউটারের সিপিইউ জব্দ করেছেন।
একইসঙ্গে উল্লেখিত পাঁচটি কম্পিউটার দোকান থেকে পাঁচজনকে আটক করলেও আদালত জব্দকৃত ল্যাপটপ ও কম্পিউটারের সিপিইউ যাছাই বাছাই সাপেক্ষে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়ে আটককৃত সবাইকে মুছলেকা নিয়ে নিজ জিন্মায় ছেঁেড় দিয়েছেন। অবশ্য মুছলেকা পরবর্তীতে আটক ওই পাঁচজন ইতোমধ্যে আদালতে হাজিরাও দিয়েছেন।
স্থানীয় একাধিক সুত্র দাবি করেছেন, সম্প্রতি সময়ে চকরিয়া উপজেলা ভুমি প্রশাসনে সহকারি কমিশনার (ভুমি) পদে রদবদল হয়েছে। এই সুযোগে কতিপয় একাধিক জালিয়াত চক্র মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আগের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে জমির কাগজ ও ভূয়া সনদ তৈরি করে অনৈতিক বাণিজ্যে মেতে উঠেছে।
অভিযোগ উঠেছে, জব্দকৃত কম্পিউটার মালিকদের মধ্যে চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ফতেহআলী সিকদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সাত্তারের ছেলে নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ভুমি অফিস ঘিরে জমি মালিক তথা সেবাগ্রহিতাদের সঙ্গে কন্ট্রাক বাণিজ্য চালাচ্ছে। বিশেষ করে তিনি নামজারি জমাভাগ খতিয়ান সৃজন, খতিয়ানের সহিমরি,দলিলের সহিমরি পাইয়ে দেয়ার নামে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার উপরে হাতিয়ে নিতেন।
অভিযোগ রয়েছে, নামজারি খতিয়ান সৃজন সহিমরি নকল পাইয়ে দেয়া ছাড়াও তিনি সেবাপ্রার্থীদের প্রয়োজন সাপেক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের জন্মসনদ, মৃত্যুসনদও (ওয়ারিশ সনদ) তাঁর দোকানের কম্পিউটার থেকে অবিকল কপি তৈরী করতেন।
স্থানীয়দের দাবি, এভাবে তিনি ভুমি অফিসের সামনে কম্পিউটার দোকান খুলে বেশুমার বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। তাঁর আগে থানা সেন্টার এলাকার ভাড়া বাসায় এসব কন্ট্রাক বাণিজ্য করতেন। এসব কাজের বদৌলতে অল্পসময়ের ব্যবধানে দোকান মালিক নজরুল ইসলাম বিপুল অর্থসম্পদের মালিক বনেছেন। দুদকসহ প্রশাসনের যে কোন সংস্থা তদন্ত করলে তাঁর অস্বাভাবিক অর্থসম্পদের সত্যতা মিলবে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসি।
এলাকাবাসির দাবি, ৪/৫ বছর আগে চট্টগ্রামে একটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন নজরুল ইসলাম। জামিনে এলাকায় ফেরার পর তিনি জড়িয়ে পড়েন জমির কাগজপত্র পাইয়ে দেয়ার কন্ট্রাক বাণিজ্যে। এভাবে তিনি এখন বিপুল সম্পদের মালিক। আর সর্বশেষ ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে তাঁর দোকান থেকে কম্পিউটার জব্দ করার পরে এলাকাবাসি আশঙ্কা করছেন এবার ফেঁেস যেতে পারে কম্পিউটার দোকান মালিক নজরুল। বেরিয়ে আসতে পারে তাঁর আসল থলের বিড়াল।
পাঠকের মতামত: