ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

মাহে রমজান ও লকডাউন কার্যকরে

চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন-পুলিশ-ব্যবসাীদের সাথে বৈঠক

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :: সরকার ঘোষিত লকডাউন কার্যকর ও পবিত্র রমজানকে ঘিরে চকরিয়া পৌরশহরের ব্যবসায়ীদের সাথে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়েরের সভাপতিত্বে ও অপারেশন অফিসার মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় সভায় ব্যবসায়ীদের উদ্দ্যেশ্য করোনা পরিস্থিতি লকডাউন নিয়ে দিকনির্দেশনাপূর্ণ বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, কক্সবাজার সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মো.তফিকুল আলম।

এসময় উপস্থিত ব্যবসায়ীর মধ্যে থেকে বক্তব্য দেন- প্রবীণ ব্যবসায়ী নুরুল আমিন, আজিজুল হক, মো.নুরুস শফি, আবদুল হামিদ, মোহাম্মদ রফিক, মো.মনছুর আলম ও রায়হানুল হক রিপন।

সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) চকরিয়া সার্কেল মো.তফিকুল আলম বলেন, লকডাউনের প্রথম দিন থেকে সরকারি নির্দেশনা মতে মাঠ পর্যায়ে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। দিন দিন লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চকরিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা তাদের জীবন বাজি রেখে মাঠে নিরলস ভাবে কাজ করছেন।

সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের যেতে হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়, তাদের নানা মানুষের সঙ্গে মিশতে হচ্ছে। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঝুঁকিতে রয়েছেন বলেও মনে করেন তিনি। এরপরও দেশের মানুষের জীবন বাঁচাতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ যত ঝুঁকিই থাকুক না কেনো করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এবং যে কোনো প্রয়োজনে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সব সময়ই মাঠে থাকবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ীদের উদ্যেশ্য বলেন, করোনা সংক্রমণের প্রকোপ দিন দিন বেড়ে যাওয়া কারণে সরকার দেশের মানুষকে রক্ষা করতে নীতিগত সিদ্ধান্ত হাতে নেয়। সে লক্ষে সরকার ১৮টি নির্দেশনাও ঘোষনা করেছে। ব্যবসায়ীদের সাথে সরকারের কোন শত্রুতা নেই।

মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য সরকার এ লকডাউন ঘোষনা করেন। মানুষের জীবন বাঁচানো আগে, তারপর জীবিকা। লকডাউন ঘোষনা হওয়ার পর থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে রাতে-দিন প্রহরী হিসেবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। তাছাড়া আমার পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে এসিল্যান্ডও মাঠে আছে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাও নিরলস ভাবে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, লকডাউন কার্যকরে করোনা’র বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের আন্দোলন করে লাভ নেই। তবে বর্তমানে করোনা সংক্রমণ হার বৃদ্ধিতে দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে সেটা উপলব্ধি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ লকডাউন সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা তো মানুষ, কিন্তু সরকারি দায়িত্বে থাকায় পরিবার পরিজন ছেড়ে আপনাদের সুরক্ষা রাখার জন্যই মাঠে আছি। আপনাদের বাঁচাতে পারলেই তাহলে তো ব্যবসা। অনেক ব্যবসায়ী কষ্টে আছেন সে বিষয়টাও আমরা অনুধাবন করি।

ইউএনও বলেন, বিগত দিনে চকরিয়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাঁচানোর জন্য সরকারি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন পর্যন্ত স্থাপন করেছি। জানামতে এই সেন্ট্রাল অক্সিজেন দেশের কোন উপজেলায় স্থাপন করছে কিনা আমার জানা নেই। শুধু আপনাদের বাঁচানোর জন্য এ কাজটি করা হয়েছে। বিগত সময়ে টানা লকডাউনে ব্যবসায়ীরা যে ভাবে সহযোগীতা করেছে প্রশাসনকে, আশা করবো এবারও তারা সহযোগীতা অব্যাহত রাখবে। সামনে পবিত্র মাহে রমজান ঘিরে ব্যবসায়ীর যে চিন্তা ধারা তা মাঠ পর্যায়ে কিভাবে ব্যবসা সচল রাখা যায় এবং ব্যবসা নিয়ে কি করতে হবে সে বিষয়ে আমি কাউকে প্রতিশ্রুতি দিতে পারবোনা। তবে সরকার রমজানের সময়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে সেই প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

 

পাঠকের মতামত: