এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::
দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহনের ক্ষেত্রে চকরিয়া উপজেলার পুর্ববড় ভেওলা মৌজার পর এবার চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা মৌজার মুল্য নির্ধারণে চরম অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে চিরিঙ্গা ইউনিয়ন ভুমি অফিস থেকে অধিগ্রহনের আওতায় পড়া জমি মালিকদের কাছে ৭ ধারা নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে। নোটিশে পালাকাটা মৌজার এক একর জমির মুল্য ৫৯ লাখ ৯১ হাজার দুইশত টাকা সরকারি বালামে লিপিবদ্ধ থাকলেও কতিপয় মহল মৌজার মুল্যের প্রকৃত বিষয়টি আড়াল করে ক্ষতিপুরণ হিসেবে প্রতি একর জমির বিপরীতে ২১ লাখ ৫২ হাজার দুইশত টাকা দেখানো হয়েছে।
এদিকে পালাকাটা মৌজার প্রতি একর জমির বিপরীতে ৩৮ লাখ ৩৯ হাজার কম দেখিয়ে জমি অধিগ্রহনের নোটিশ দেয়ার পর থেকে পৌরসভার পালাকাটা মৌজার ভুক্তভোগী জমি মালিক ও স্থানীয় লোকজনের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
ইতোমধ্যে জমির মৌজা মুল্য নির্ধারণে অনিয়মের ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী জমি মালিকদের পক্ষ থেকে গত ২০ ও সর্বশেষ ২৪ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এরপরও বিষয়টির আলোকে অদ্যবদি কোন ধরণের ইতিবাচক সুরাহা না হওয়ায় গত দুইদিন ধরে এলাকায় বিক্ষোভ করছেন ভুক্তভোগী জমি মালিক ও স্থানীয় লোকজন। ভুক্তভোগীরা জমি অধিগ্রহনের ক্ষেত্রে সরকারি বালামে লিপিবদ্ধ মতে মৌজার মুল্য অনুযায়ী জমির ক্ষতিপুরণ নিশ্চিতের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
ভুক্তভোগী জমি মালিক ও স্থানীয় লোকজন জানান, চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা মৌজার এক একর জমির মুল্য ৫৯ লাখ ৯১ হাজার দুইশত টাকা সরকারি বালামে লিপিবদ্ধ রয়েছে। যাহা উপজেলা ও জেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে রক্ষিত তালিকায় অর্ন্তভুক্ত আছে। কিন্তু রেল লাইনের জমি অধিগ্রহনের শুরুতে কতিপয় মহল নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য পরিকল্পিতভাবে পালাকাটা মৌজার জমির মুল্যের প্রকৃত আড়াল করে ক্ষতিপুরণ হিসেবে প্রতি একর জমির বিপরীতে ২১ লাখ ৫২ হাজার দুইশত টাকা নির্ধারণ করেছে। অপরদিকে বাড়িভিটার প্রতি একর জমির মুল্য দুই কোটি ৫ লাখ ৩৯ হাজার পাঁচশত টাকা নির্ধারণ থাকলেও একইভাবে ক্ষতিপুরণের ক্ষেত্রে দেখানো হয়েছে প্রতি একর বাড়িভিটার জায়গার বিপরীতে ৪৩ লাখ ৩৮ হাজার একশত।
চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা মৌজায় নজীরবিহীন জমির মৌজা মুল পরিবর্তনের এ ঘটনায় ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের দপ্তরে দুইদফা লিখিত অভিযোগ করেছেন এলাকার ভুক্তভোগী জমি মালিকরা। লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী জমি মালিকদের পক্ষে মৃত আবদুল জলিলের ছেলে মো.নুরুল আবছার, ফজল করিমের ছেলে আবুল কাসেম, আহমদ কবিরের ছেলে নুরুল হক, ফজল করিমের ছেলে এনামুল হক, তোফায়েল আহমদের ছেলে রেজাউল করিম, আহমদ চোবাহানের ছেলে আজিজুল হক, মৃত ফজল কবিরের ছেলে ফারুক আহমদ ও রুহুল আমিনসহ অনেকে বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরেছেন।
ভুক্তভোগী জমি মালিকরা দাবি করেছেন, আমরা চাই আমাদের জায়গার উপর দিয়ে রেল লাইন স্থাপন করা হোক। সরকারি উন্নয়ন কাজটি বাস্তবায়ন হলে এটি হবে আমাদের এলাকার জন্য সম্পদ, আমরা প্রকল্পের বিরুদ্ধে নই। সরকার প্রকল্পের অধীনে জমি মালিকদেরকে যথাযথ ক্ষতিপুরণ নিশ্চিত করতে জমি অধিগ্রহনে টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা নিজেদের পকেট ভারী করার জন্য পরিকল্পিতভাবে অধিগ্রহনের টাকা হরিলুট করতে এখন চক্রান্তের আশ্রয় নিয়েছেন। চক্রান্তের অংশহিসেবে চক্রটি চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা মৌজার জমির মুল্যের প্রকৃত আড়াল করে ক্ষতিপুরণের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন অনিয়ম করেছেন।
ভুক্তভোগীদের দাবি, সরকারি প্রকল্পের অগ্রাধিকার নিশ্চিতে চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা মৌজার জমি মালিকরা ৭ ধারার নোটিশের আলোকে জমি ছেঁেড় দিতে। কিন্তু জমির মৌজা মুল্য অনিয়মের কারনে বর্তমানে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে ওই এলাকার বিপুল সংখ্যক আবাদি জমি ও বাড়িভিটার মালিক। অপরদিকে অধিগ্রহনের আওতায় পড়ে বসতবাড়ি হারাচ্ছে শতাধিক পরিবার।##
পাঠকের মতামত: