ঢাকা,সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় পানির অভাবে ধানি জমিতে ফাটল ধরেছে , কৃষকদের হতাশা

চকরিয়া  সংবাদদাতা ::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের মাছঘাট শাখা খালটি হঠাৎ করে শুকিয়ে গেছে। এতে মাতামুহুরী নদী থেকে পানির উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় শতাধিক কৃষকের বিস্তীর্ণ জমির বোরোধান ক্ষেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। গেল পক্ষকাল ধরে সেচ সুবিধা অনিশ্চিত হয়ে পড়লেও দায়িত্বরত স্কীম মালিক কিংবা উপজেলা কৃষি বিভাগ বিকল্প উপায়ে সেচ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় কৃষকদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।

চিরিঙ্গা ইউনিয়নের পালাকাটা এলাকার বাসিন্দা চকরিয়া উপজেলা কৃষি বর্গাচাষী সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন পুতু বলেন, মাতামুহুরী নদীতে বর্তমানে পানির স্তর তুলনামূলক একটু নীচে নেমে গেছে। এই অবস্থার কারণে মাতামুহুরী নদীর মোহনা হয়ে প্রভাহিত চিরিঙ্গা ইউনিয়নের মাছঘাট শাখা খালটি এখন শুকিয়ে গেছে। এতে সেচ সুবিধার পানি সংকটে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
তিনি বলেন, মাছঘাট খালে পানি না থাকায় স্কীম মালিকও কৃষকদের জমিতে পানি সরবরাহ দিতে পারছে না। এই অবস্থার কারণে বর্তমানে পালাকাটা মাছঘাট এলাকার বেশিরভাগ কৃষকের বোরোধান ক্ষেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। কৃষকের সেচ সুবিধা অনিশ্চিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় চিরিঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল হোছাইন চৌধুরী।
তিনি বলেন,মাছঘাট শাখা খালটি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় কৃষকেরা বোরোধান চাষ নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়েছেন। যথাসময়ে পানি পাওয়া না গেলে এবার বোরো চাষের নাজুক অবস্থা হবে।

তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য বিকল্প উপায়ে পানি সুবিধা নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার জরুরি হস্তক্ষেপ চাই। পালাকাটা মাছঘাট এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান, আলমগীর, জয়নাল আবেদীন, কবির আহামদ, রহমত আলী, দেলোয়ারসহ অনেকে বলেন, জমিতে বীজতলা রোপনের পর ইতোমধ্যে বোরোধান ক্ষেতে সতেজতা তৈরি হয়েছে।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ধান গাছে তোড় আসবে। এরই মধ্যে খালে পানি নেই অজুহাতে স্থানীয় স্কীম মালিক কেএম মঈনউদ্দীন প্রতিজন কৃষকের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা ( সেচ খরচ) করে নেয়ার পরও জমিতে পানি দিচ্ছেন না। কৃষকেরা বলেছেন, জমিতে পানি সুবিধা দেওয়ার জন্য স্কীম মালিকের বিকল্প ব্যবস্থা ডিব (টিউবওয়েলের সাহায্যে পানি উত্তোলন) পদ্ধতি রয়েছে। কৃষকেরা জনপ্রতি আরও ১ হাজার টাকা করে দেবে জানালেও স্কীম মালিক মঈনউদ্দীন জমিতে সেচ সুবিধা দিতে অনীহা দেখাচ্ছেন। এই অবস্থার কারণে আমরা বোরোধান ক্ষেতের ফলন নিয়ে চরম অনিশ্চিতায় ভুগছি।

কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, শাখা খালটি শুকিয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলা কৃষি বিভাগকে জানানো হলেও আমরা কোন আশা দেখছি না।

এব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, খাল শুকিয়ে গেলেও বিকল্প উপায় থাকলে সেটি দিয়ে তো কৃষকের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাসিম হোসেন বলেন, মাছঘাট শাখা খালটি চিরিঙ্গা ইউনিয়নের স্থানীয় কৃষকদের সেচ সুবিধার অন্যতম মাধ্যম। কী কারণে খালটি শুকিয়ে গেছে সেটি সরেজমিনে দেখে সেচ সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। যদি খালের পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে বেগ পেতে হয় তাহলে বিকল্প উপায়ে কৃষকের বোরোধান ক্ষেতে পানি দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: