নিজস্ব প্রতিবেদক ::
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গাড়িচাপায় একই পরিবারের ৬ ভাইয়ের মৃত্যু কোনরূপ দুর্ঘটনাজনিত ঘটনা নয়। অবস্থাদৃষ্টে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড মনে হয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ঘটনার পরপরই একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ, ঘটনাটির বস্তুনিষ্ঠভাবে তদন্ত করা হউক। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন এবং এর সঙ্গে কারা জড়িত তা চিহ্নিত করা হোক।
তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি গাড়ি চাপার আগে ও ঘটনার পরের কিছু অডিও ক্লিপ বের হয়েছে। যার সঙ্গে ছয় ভাইকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যার ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে। এগুলোকে তদন্তকালে হাতিয়ে দেখার অনুরোধ করছি।
রানা দাশগুপ্ত বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী প্লাবন সুশীল ঘটনার আকস্মিকতায় অনেকটা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য অবস্থায় ঘটনার পর থেকে ডুলাহাজারা খ্রিস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতালে তার মৃত ৪ ভাইয়ের লাশের পাশে ছিল। আনুমানিক সকাল ৮টার দিকে সে সেখানে উন্মাদপ্রায় হয়ে পড়ে। ওই চকরিয়া থানায় রাত ৭টায় হাজির হয়ে এজাহার দায়েরের যে কথা কথিত এজাহারে লিপি আছে তা বাস্তবতার সম্পূর্ণ বিপরীত। এজাহারের বর্ণিতমতে কথিত এজাহার দায়েরের সময় প্লাবন সুশীলের সঙ্গে যাওয়া তার কাকা সন্তোষ সুশীলের সঙ্গেও কথা বলেছি। তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, কম্পিউটারে টাইপকৃত কথিত এজাহার হাইওয়ে পুলিশের নিজেদেরই যোগসাজশে লেখা। সেখানে কি লেখা আছে তা তাদের পড়তে দেওয়া হয়নি বা তাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কোনো আলোচনাও করা হয়নি।
তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ সৎকারের যে আবেদন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মালুমঘাট হাইওয়ে থানা বরাবরে করা হয়েছে তা প্লাবন সুশীল বা তার পরিবারের কেউ করেনি। একটি কাগজে হাইওয়ে থানা কর্তৃপক্ষ সন্তোষ সুশীল ও অন্য আরেকজনের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়েছে। ওই কাগজে কি লেখা আছে তা তাদের জানা নেই।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পিকআপ ভ্যানের ধাক্কায় রক্তিম সুশীলের ভাই অনুপম শীল, নিরুপম শীল, দীপক সুশীল, চম্পক সুশীল ও স্মরণ সুশীল নিহত হন। একই দুর্ঘটনায় আহত রক্তিমকে ওই দিনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ২২ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পাঠকের মতামত: