নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাউল ক্রয়ের তালিকায় নাম থাকলেও চাউলের দেখা নাই তাদের। সময় মত ডিলারের কাছে চাউল ক্রয় করতে গিয়ে প্রতিবারই খালি হাতে ফিরে আসছেন অনেকেই। তন্মধ্যে যারা পাচ্ছেন তাদের সঠিক ওজনে ৩০ কেজির বেলায় দিচ্ছেন ২৮ কেজি। এবার নিরুপায় হয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছেন চাউল ক্রয় করতে না পারা ভুক্তভোগী হত দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগ থেকে জানা যায়,কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার ওএমএস ডিলার মামুনুল গণি’র কাছ থেকে ১৫ টাকা কেজি মূল্যে প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাউল সরকার ঘোষিত সময়ে ক্রয় করতে গিয়ে প্রতিবারই ওজনে কম ও অনেককে চাল না দেয়ার অভিযোগ এসেছে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীতে তাদের ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি দেয়ার কথা থাকলেও ২৮ কেজির বেশি দিচ্ছেনা ডিলার মামুনুল গণি। চাউল বিক্রির সময়ে তাঁর কাছে গেলে কটু কথা শুনে ফিরে এসে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অভিযোগ দিলে তিনি স্ব- শরীরে গিয়ে অভিযোগের কারণ জানতে চাইলে কোন সদুত্তর পাননি বলে সাংবাদিকদের জানান ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইন চৌধুরী।
নিয়ম অনুসারে ডিলার হতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির তাঁর ইউনিয়নে বড় হাট বা বাজারে নির্ধারিত দোকান থাকতে হবে। আর ওই দোকানে কমপক্ষে ১৫ টন মালপত্র মজুত রাখার জায়গা থাকতে হবে। কিন্তু সাহারবিল ইউনিয়নের ডিলার মামুনুল গণি’র নেই কোনো বড় দোকান,তবুও রাজনৈতিক প্রভাবে তাদের ডিলার করা হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে জানা যায়, ইউনিয়নের বসবাসরত অর্ধশতাধিক হত দরিদ্র জনগণ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাউল ক্রয়ে ডিলারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন। ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর কার্ডধারী দিদার মিস্ত্রি, ফরিদুল আলম, ছৈয়দ আলম, বেলাল উদ্দিন, বশির আহমদ, নুরুল হাকিম, মুজাফফর আহমদ, দেলোয়ার হোসেন, নুরুল হাকিম, মনছুর আলম,আব্দু শুক্কুর, বিলকিস আক্তার,উম্মে কুলসুম,সালেহা বেগম সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক হত দরিদ্র পরিবার অভিযোগ করে বলেন, ‘এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বারবার অনুরোধ করে এই কার্ড পাইছিলাম। আমরা অভাবি মানুষ দিনে এনে দিনে খাই। ১৫ টাকা দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা বলে ২৮ কেজির বেশি চাল দেয়না। অনেক সময় খালি হাতে ফেরত দেয়। চাল চাইলে বিভিন্ন ধরনের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ডিলার মামুন।
অভিযোগের বিষয়ে ডিলার মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দেননি। তবে এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নবী হোসাইন চৌধুরী বলেন, সাহারবিলে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীতে অনিয়মের বিষয়ে শুনেছি। অনেক হতদরিদ্র পরিবার ডিলার মামুনুল গণির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বহুবার। উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে অনেকবার অবগত করলেও কোন প্রতিকার পাইনি। আজ প্রায় অর্ধশতাধিক হতদরিদ্র পরিবার আমার কাছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে চাল ওজনে কম দেয়া ও অনেককে চাল না দিয়ে খালি হাতে ফেরত দেয়ার অভিযোগ করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাহাত উজ্জামান কে অবগত করি।তিনি এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তপন মল্লিক বলেন; ডিলার মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চকরিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাহাত উজ্জামান জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওনার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাঠকের মতামত: