অনলাইন ডেস্ক ::
বাংলাদেশে এখন বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন বন্দি। এখানে ভয়াবহ দুঃশাসন চলছে। সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতির ছোবলে গণতন্ত্রকে করা হয়েছে দেশছাড়া। দেশে মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার সকল পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এদেশে এখন বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। খালেদা জিয়া বলেন, ২৬শে জুন জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবসটি অত্যন্ত তাৎপর্যময়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-উত্তর ঔপনিবেশিক শৃঙ্খল থেকে জাতিসমূহ স্বাধীনতা অর্জন করলেও আজও বিশ্বব্যাপী চলছে জাতিগত, বর্ণগত, ভাষাগত এবং ধর্মীয় ও সম্প্রদায়গত সংঘাত। আর এই সংঘাত ও বিরোধের কারণেই সাধারণ মানুষেরা দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে নিহত ও পঙ্গুত্ববরণ করছে। মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর কারাযন্ত্রণা ভোগ করছে। সারা বিশ্ব আজ যান্ত্রিক সভ্যতায় এগিয়ে গেলেও মানবিক সভ্যতা বেশিদূর এগুতে পারেনি। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে বিএনপিসহ বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুম, খুন, অপহরণ ও গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল অভিযানের পাশাপাশি বড় অংকের চাঁদার দাবিতে সমাজে অসংখ্য দলনিরপেক্ষ মানুষও সরকারি গুম-খুনের অনাচারের শিকার হচ্ছে। বন্দুকযুদ্ধের নামে মানুষ হত্যাকে গা-সওয়া করানো হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যা এবং অসংখ্য সাংবাদিককে নিষ্ঠুরভাবে দৈহিক নির্যাতন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও মত প্রকাশের স্বাধীনতা স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য একের পর এক সংবাদপত্র, টেলিভিশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, যাতে বিরোধীদের কণ্ঠ শোনা না যায়। খালেদা জিয়া বলেন, বাংলাদেশে সরকারের অগণতান্ত্রিক ও অসহিঞ্চু আচরণের প্রতিবাদ করতে গেলেই লেলিয়ে দেয়া হয় তাদের নিজস্ব পেটোয়া বাহিনী। এই সরকারের পোষ্য সন্ত্রাসীদের হাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশুরাও ভয়াবহভাবে নির্যাতিত হচ্ছে। তিনি বলেন, উত্থান হয়েছে এক দানবীয় উগ্র জঙ্গি শক্তির, যারা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, ব্লগার, শিয়া সম্প্রদায়, পীর, বাউল-সাধক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের ওপর মরণঘাতী হামলা করছে। এদের আক্রমণে দেশের কোনো না কোনো এলাকা রক্তে সিক্ত হচ্ছে। এই উগ্র গোষ্ঠীর কার্যকলাপ নিয়ে সরকারের ভূমিকা এখন রহস্যঘেরা। জঙ্গিদের দমনের নামে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সাধারণ মানুষের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে দুঃসহ নিপীড়নের খড়গ। আমি তাই জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতনবিরোধী দিবসে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল নির্যাতিত মানুষকে সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই নিষ্ঠুর নির্যাতনকারী গোষ্ঠী ও নির্দয় শাসককে পরাস্ত করা সম্ভব। আলাদা বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দিবসটি উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতি জানাই গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা।
পাঠকের মতামত: