নিউজ ডেস্ক ::
দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তি খালাস না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না বলে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ আদেশ দেন।
আদালত হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের করা আবেদনে ‘নো অর্ডার’ বলে আদেশ দেন। ফলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলটির ১৫ কেন্দ্রীয় নেতা, আওয়ামী লীগের চারজন, তৃণমূল বিএনপির দুজন এবং জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা নির্বাচনের অযোগ্য হয়েছেন। যদিও এই রাজনীতিকদের মধ্যে বিএনপির তারেক রহমান, আওয়ামী লীগের হাজি মকবুল, তৃণমূল বিএনপির ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবং তাঁর স্ত্রী অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা নির্বাচন করছেন না। আর ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলেও মঙ্গলবার তা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
হাইকোর্ট গত ২৭ নভেম্বর দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া সাজা স্থগিত চেয়ে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, মশিউর রহমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভুঁইয়া ও আব্দুল ওহাবের করা আবেদন খারিজ করে দেন। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কারো দুই বছরের বেশি দণ্ড হলে, আপিল বিভাগ থেকে সম্পূর্ণভাবে তাঁর সাজা বাতিল না হওয়া বা অভিযোগ থেকে খালাস না হওয়া কিংবা সাজা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে অযোগ্য হবেন। দণ্ডের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল বিচারাধীন থাকাবস্থায়ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছিলেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তাঁর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ।
দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গতকাল আপিল বিভাগের আদেশের পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আবারও জোর দিয়ে বলেছেন, দণ্ডিত ব্যক্তি আপিল আদালত থেকে খালাস পেলেও খালাসের দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচন করতে পারবেন না।
বাংলাদেশের সংবিধান অুনযায়ী দুর্নীতির দায়ে দুই বছর বা তার বেশি সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সাজা যদি দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বহাল থাকে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সাজা খেটে কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পর পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচনে অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।
আপিল বিভাগের আদেশ ও অ্যাটর্নি জেনারেলের ব্যাখ্যা অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হতে পারছেন না তাঁদের মধ্যে বিএনপি নেতারা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আমানউল্লাহ আমান ও তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমান, সাবেক সংসদ সদস্য (ঝিনাইদহ) মশিউর রহমান, ওয়াদুদ ভুঁইয়া (খাগড়াছড়ি), আব্দুল ওহাব (ঝিনাইদহ), রশীদুজ্জামান মিল্লাত, মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সাবেক মন্ত্রী এম মোরশেদ খানের ছেলে ফয়সল মোরশেদ খান।
তৃণমূল বিএনপির ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও তাঁর স্ত্রী অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা।
আওয়ামী লীগের ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক এমপি হাজি মকবুল আহমেদ, হাজি মোহাম্মদ সেলিম ও জয়নাল হাজারী। জামায়াতে ইসলামীর শাহজাহান চৌধুরী।
পাঠকের মতামত: