নিউজ ডেস্ক :: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশে ওয়ান ইলেভেনের সময় বিরাজনীতিকরণের যে ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত হয়েছিল, সেই হাওয়া এখনও চলছে। তখন যেমনভাবে সব রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা হয়েছিল, ঠিক তেমনিভাবে এই সরকারও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দিয়ে দেশে একদলীয় শাসনের ব্যবস্থা করেছে।’
রবিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের হলরুমে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমরা যখন ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের স্মরণসভা করছি তখন আমাদের নেত্রী কারাগারে। সারাদেশে এক লাখ মামলায় ২৬ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। যারা বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থক। আমাদের ৫শ নেতাকর্মীকে ইতোমধ্যেই গুম করা হয়েছে। হাজারের ওপরে নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন এ সরকারের পেটোয়া বাহিনীর হাতে।
তিনি বলেন, এই সরকার গণতান্ত্রিক সমাজ তছনছ করে দিয়েছে। একদলীয় শাসন অঘোষিত বাকশাল প্রতিষ্ঠার সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে। ৭৫ সালে সংসদে ঘোষণা দিয়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল, আজ বাকশাল করছে ঘোষণা না দিয়ে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ আমাদের নেত্রী কারাগারে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাসনে। এ ধরনের একটি জটিল, সংকটময় মুহূর্তের মধ্যদিয়ে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এ সংকটময় মুহূর্তে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখাটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। নিঃসন্দেহে আমরা সবার সমবেত প্রচেষ্টায় সেই কাজটিই করছি।
তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি একটি খুনির দল। উনি ভুলে গেছেন যে ওনারা ৭২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে খুনের রাজনীতি শুরু করেছিলেন। সেদিন তারা রক্ষীবাহিনী তৈরি করে বিরোধীদলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন করেছিলেন। সেদিন তারা সিরাজ শিকদারকে খুন করেছিলেন। বিএনপি কখনও খুনের রাজনীতি করে না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে খুন করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সারা দেশে লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে দাবি করে তিনি বলেন, যেখানে যাবেন, সেখানেই দেখবেন আওয়ামী লীগের লোকেরা লুটপাট ছাড়া আর কিছু করছে না।
তিনি বলেন, ঐক্যর কোনো বিকল্প নেই। গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। দল, মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করে আনতে হবে। দেশে একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ আয়োজিত আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নির্বাহী কমিটির সদস্য সিরাজুল হক, রশীদুজ্জামান মিল্লাত, নিলোফার চৌধুরী মনি, ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের জামাতা এম হাসান, ভাতিজি সাদিয়া হক। উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের স্ত্রী মাহমুদা সালাম।
পাঠকের মতামত: