ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

আইসিসির প্রতি ‘বৌদ্ধ লাদেন’ মিয়ানমারে এলে হাতে অস্ত্র নেব

মিয়ানমারের উগ্র জাতীয়তাবাদী সন্ন্যাসী উইরাথু। ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক ::

যেদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) মিয়ানমারে প্রবেশ করবে, সেদিনই অস্ত্র হাতে তুলে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন ‘বৌদ্ধ বিন লাদেন’ নামে পরিচিত দেশটির উগ্র জাতীয়তাবাদী সন্ন্যাসী উইরাথু। গত রোববার তিনি মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সেনা-সমর্থিত সমাবেশে দেওয়া এক ভাষণে এ হুমকি দেন। তিনি রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর সমালোচনাও করেন।

এর আগে বারবার ধর্ম নিয়ে ঘৃণাপূর্ণ ও অযাচিত বক্তব্য দিয়ে ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে উইরাথুকে কোনো জনসভায় বক্তব্য দেওয়া নিষিদ্ধ করেছিল মিয়ানমারের সন্ন্যাসীদের একটি কাউন্সিল। তবে গত মার্চে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়। এরপরই এই প্রথম কোনো জনসভায় বক্তব্য দিলেন উইরাথু। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে মিয়ানমারের সেনাপ্রধানসহ ছয়জন শীর্ষ কর্মকর্তার বিচারের আহ্বানের জন্য তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনাও করেন।

এর আগে ঘৃণা ও উসকানি দিয়ে সহিংসতা ছড়ানোর অভিযোগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে উইরাথুকে নিষিদ্ধ করা হয়।

রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ উল্লেখ করে উইরাথু বলেন, এই ‘বাঙালিরা’ বিশ্বের কাছে মিথ্যা বলে মিয়ানমারের স্থায়ী বাসিন্দা হতে চাচ্ছে।

উইথারু বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যেদিন মিয়ানমারে আসবে, সেদিনই আমি হাতে বন্দুক তুলে নেব।’ জাতিসংঘে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া ঠেকানোর জন্য উগ্র জাতীয়তাবাদী সন্ন্যাসী উইরাথু চীন ও রাশিয়ার প্রশংসা করেন। তিনি দেশ দুটিকে ‘সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো জাতীয়তাবাদী দানব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

উইথারু বলেন, ‘বাঙালিদের রোহিঙ্গা বলে বিশ্বের কাছে মিথ্যা বলবেন না। কারণ আপনারা মিয়ানমারে ইসলামীকরণ করতে চান। একটি ভুয়া গ্রুপ তৈরি করে আমাদের দেশকে ধ্বংস করবেন না।’ তিনি মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করলে লাখে লাখে রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আসে। ওই সময় মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গণধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক মাত্রায় হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার তদন্ত দল। জাতিসংঘের একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গণহত্যার উদ্দেশ্যে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এ জন্য মিয়ানমারের কয়েকজন জেনারেলের সাজার কথা বলেছে তদন্ত দলগুলো। তথ্যসূত্র: নিউ স্ট্রেইটস টাইমস ও এএফপি।

পাঠকের মতামত: