ঢাকা,শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

অবশেষে উদ্ধার হলো মায়ানমারে পাচার হওয়া বান্দরবানের ১১ কিশোরী

Bandarban-Nari-Pic_2বান্দরবান প্রতিনিধি :: :

বৌদ্ধ ভিক্ষু আটকের ৬ দিনের মাথায় বান্দরবান থেকে মায়ানমারে পাচার হওয়া ১১ কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা ১১ কিশোরীর বাড়ী বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন পল্লীতে। পাচারের ঘটনায় ১ ভিক্ষুসহ এ পর্যন্ত ২ জনকে আটক করা হয়েছে।

উদ্ধার অভিযানে সমন্বয়কারী কেপিএম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ হেমানন্দ ভিক্ষু জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারী তাদের একটি টিম মায়ানমার ঘুরে আসে এবং নাইসা ডং বৌদ্ধ আশ্রমে অবস্থানরত কিশোরীদের ফেরত দেয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু আশ্রম কর্তৃপক্ষ তাদের ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে গত বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে মায়ানমারের মংডু জেলার নাইসা ডং বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ভিক্ষু উ সারানা ভিক্ষুর সাথে যোগাযোগ করে উভয়ের সম্মতিতে ১১ কিশোরীকে ফেরত দিতে রাজি হয়। শুক্রবার রাতে মায়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) নাইসা ডং বৌদ্ধ বিহার থেকে ১১ কিশোরীকে উলাবুনিয়া বর্ডারে নিয়ে আসে এবং ১১ কিশোরীকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে। শনিবার ভোর রাতে বিজিবি সদস্যরা বান্দরবান ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। উদ্ধার হওয়া ১১ কিশোরী হচ্ছে পাই নু চিং (১৪) লুজা মারমা (১৩) চিং থে উ (১৩) মেচিং মারমা ( ১৪) চা নু চিং মারমা (১৪) নু ক্রাই উ মারমা (১৫) মাইক্য চিং (১৪) উ ক্রে ঞো ( ১৪) হ্লা মেই চিং (১৩) মে থুই চিং (১৪) মা ম্যা চিং (১৪)। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে উসা থোয়াই নামে ১ ব্যক্তিকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ তার বাড়ী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাছড়ি ইউনিয়নের বাসিন্দার বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, গত ২ মাস আগে উসিরি ভিক্ষু (২৩) নামে এক বৌদ্ধ ভিক্ষু বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আশ্রমে রাখার কথা বলে মারমা সম্প্রদায়ের ১৪ কিশোরীকে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার মিতিংঙ্গ্যা ছড়ি বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যায়। সেখান থেকে ১ কিশোরী বাড়ী ফিরে গেলেও ১৩ কিশোরীকে মায়ানমার পাচার করে দেয়। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে পাচার হওয়া কিশোরীর অভিভাবকরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশকে অবহিত করলে কাপ্তাই থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মিতিংঙ্গ্যা ছড়ি বৌদ্ধ বিহার থেকে নারী পাচারের মুল হোতা উসিরি ভিক্ষুকে ১১ মার্চ আটক করা হয়। আটকের পর বৌদ্ধ ভিক্ষুকে ৪ দিনের রিমান্ড নেয়া হয় এবং সে পাচারের কথা স্বীকার করে। পরে তার দেয়া তথ্য মতে ১৩ কিশোরীর মধ্যথেকে ১১ কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।

বান্দরবানে ডিবি পুলিশের (ওসি) মঞ্জুরুল আলম জানান, মায়ানমারে পাচার হওয়া ১১জনকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ায় ১১ কিশোরী চরমভাবে ক্লান্ত। তারা স্বাভাবিক হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। মায়ানমার বৌদ্ধ আশ্রমে কতজন বাংলাদেশী রয়েছে সে বিষয়টি নিশ্চিত নয়। তবে বাকী দু-জনকে উদ্ধারে চেষ্টা চলছে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

পাঠকের মতামত: