ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

২ থেকে ৪ জুলাই ব্যাংক খোলা

bangladesh-bank_kalerkanthoসরকারি ছুটির মধ্যেও আগামী ২, ৩ ও ৪ জুলাই পোশাক শিল্পসমৃদ্ধ এলাকাসহ দেশের সব বাণিজ্যিক এলাকা এবং বড় বড় বিপণিবিতানের আশপাশের সব ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। ওই তিন দিন বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা রাখা ব্যাংকের শাখাগুলো থেকে কেবল নগদ টাকা তুলতে ও জমা দিতে পারবে গ্রাহকরা। এতে শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য বিক্রির নগদ টাকা জমা রাখার ঝুঁকিও অনেকটা কমে আসবে। গ্রাহকদের অতি জরুরি প্রয়োজনের কথা বিবেচনায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ওই তিন দিন বিশেষ এলাকার ব্যাংক শাখা খোলা রাখার এ নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগ থেকে এক সার্কুলার দিয়ে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের নির্দেশনাটি জানিয়ে দেওয়া হয়।

এবারের ঈদে টানা ৯ দিন ছুটি পড়ে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক গতি অব্যাহত রাখতে আগামী ২ থেকে ৪ জুলাই সব ব্যাংক খোলা রাখার জন্য গত সোমবার গভর্নর ফজলে কবিরকে অনুরোধ করে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি দল। এর আগে কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার সুবিধার্থে পোশাকশিল্প মালিকদের পক্ষ থেকে ২, ৩ ও ৪ জুলাই পোশাকশিল্প এলাকার ব্যাংক শাখা খোলা রাখার অনুরোধ করেছিল বিজিএমইএ।

ওই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে গত রবিবার এক সার্কুলারে আগামী ২ ও ৩ জুলাই পোশাকশিল্প এলাকার ব্যাংক শাখাগুলো খোলা রাখার কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। অন্য এক সার্কুলারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাহী ক্ষমতাবলে ঘোষিত সরকারি ছুটি অনুযায়ী ৪ জুলাই সব ব্যাংক বন্ধ রাখার কথাও বলা হয়। ওই দিনটির পরিবর্তে আগামী ১৬ জুলাই শনিবার সব ব্যাংক খোলা রাখার নির্দেশও দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কিন্তু গতকালের নির্দেশনায় আরো এক দিন বাড়িয়ে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পোশাকশিল্প এলাকার ব্যাংক শাখাগুলো মোট তিন দিন (২, ৩ ও ৪ জুলাই) খোলা রাখার নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পাশাপাশি ওই তিন দিনই দেশের সব বাণিজ্যিক এলাকা ও বৃহৎ বিপণিবিতান যে এলাকায় আছে সেসব এলাকার শাখাগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে কোন কোন শাখা খোলা রাখার প্রয়োজন তা নির্ধারণ করার ভার ব্যাংকগুলোর ওপরই ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকার গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থে মহানগরীর বাণিজ্যিক এলাকা বিশেষ করে মতিঝিল, দিলকুশা, পল্টন, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, পান্থপথ, কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, মৌচাক, যাত্রাবাড়ী, মিরপুর, রামপুরা, গুলশান, বনানী, বারিধারা ছাড়াও আরো কিছু এলাকার ব্যাংক শাখা খোলা থাকবে। ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকা ও বড় বিপণিবিতানের আশপাশের ব্যাংক শাখাও খোলা থাকবে।

ওই তিন দিন সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির মধ্যে ব্যাংক খোলা রাখতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যাংকের কাজে যোগ দেবেন তাঁদের যুক্তিসংগত ভাতা দিতেও নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তবে ছুটির মধ্যে তিন দিন নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংক শাখা খোলা থাকলেও বেসরকারি চাকরিজীবীদের জুন মাসের বেতন পাওয়ার অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। কেননা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিকটস্থ ব্যাংকে খোলা করপোরেট হিসাবের মাধ্যমে কর্মীদের বেতন দিয়ে থাকে। দেশের সব ব্যাংক খোলা না থাকলে ওই সুযোগটি সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাবে না। তবে কিছু কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা জানিয়েছেন, স্বজনদের নিয়ে ভালোভাবে ঈদ উদ্যাপনের সুবিধার্থে তাদের নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে ৩০ জুনের আগেই মাসিক বেতন পরিশোধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।

 

পাঠকের মতামত: