অনলাইন ডেস্ক :::
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই হামলা হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, হত্যা আর গুম-খুনের মাধ্যমে সরকারের লোকেরা মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে। ভবিষ্যতে এসব অপরাধের বিচার করা হবে। বিএনপি মহাসচিবের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদের বক্তব্য প্রফেশনাল মিথ্যাবাদীর বহিঃপ্রকাশ।
রিজভী মঙ্গলবার এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, হাছান মাহমুদ ডাহা মিথ্যা কথা বলেছেন। আপনার নির্বাচনী এলাকা, বিএনপির মহাসচিবসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ নেতারা সেখানে আক্রান্ত হয়ে গেলেন। তিনি মনে করেছেন, মানুষ বোধহয় উটপাখির মতো বালুর মধ্যে মুখ বুঝে বসে আছে, এটা জনগণ দেখছে না। একটা কথা বলে দিলেই মানুষ বিভ্রান্ত হবে। আসলে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা হচ্ছেন প্রফেশনাল মিথ্যাবাদী। আমরা বলতে চাই, ওই হামলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত। এটা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং সবার শীর্ষের ওপর যিনি প্রধান শীর্ষ প্রধানমন্ত্রী তারই নির্দেশে হাসান মাহমুদ বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা করেছে। এটা অবধারিত সত্য।
রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও যুবদলের উদ্যোগে কারাবন্দি যুব দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাঈদ হাসান মিন্টুর মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। মানববন্ধনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, সাবেক কমিশনার শহিদুল ইসলাম বাবু, মহিলা দলের শামসুন্নাহার ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের মনে করেছে, মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলার মধ্য দিয়ে বিএনপি ভয় পেয়ে যাবে। তারা যেমন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে কাওরান বাজারে হামলা করেছিলো, নারায়ণগঞ্জে হামলা করেছিলো। তারপরও বিএনপির প্রতিটা নেতাকর্মী ভীত হয়নি, তাদের রক্ত কণিকা আরো তেজোদীপ্ত হয়েছে, রাজপথে রাজপথে ধুলো উড়িয়ে এখনো তারা কর্মসূচি পালন করছে। এতো গুম-খুনের মতো উৎপীড়ণের পরও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে তারা দমিয়ে দিতে পারেনি।
কারাগারের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার আমলে কারাগারগুলো এখন শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত গ্যাস চেম্বার বা মৃত্যু চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে। এটা একটি স্বাধীন দেশের অপরাধীদের জন্য কারাগার নয়। এই কারাগার হচ্ছে, অন্যায় ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদ করবে, তাদের ধরে ধরে এই কারাগারগুলো ভরে ফেলবে।
রিজভী আরো বলেন, আমরা আর চুপ-চাপ বসে থাকবো না। এবার সময় আসছে, জেলের তালা আক্রমণ করার। আমরা অনেক শাস্তিপূর্ণ কর্মসূচি করেছি, এতো মারধর, এতো রক্ত, এতো লাশের পর আমরা আর চুপচাপ বসে থাকবো না। এবার জেলখানার তালা ভাঙার কর্মসূচির দিকেই বিএনপি এগিয়ে যাবে। যদি সরকার এধরনের নিপীড়ণ অব্যাহত রাখে। অবিলম্বে কারাবন্দি সাঈদ হাসান মিন্টু, আমিনসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানান তিনি।
রিজভী বলেন, যারা গুম করেছে আমাদের সন্তান জনিকে, বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করেছে, যারা ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে, চৌধুরী আলমকে গুম করেছে, যারা এমপি সাইফুল ইসলাম হিরুকে গুম করেছে, হুমায়ুন পারভেজকে গুম করেছে এটাও মানবতাবিরোধী অপরাধ। এই অপরাধের জন্য এই সরকারের যারা দায়ী, এই সরকারের প্রশাসনের যারা দায়ী, তাদেরও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিএনপি বিচার করবে।
পাঠকের মতামত: