ঢাকা,রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে মিয়ানমারে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছি-গাম্বিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে গণহত্যার তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতকে বলেছেন গাম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল ও সেদেশের আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু।

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টার দিকে শুরু হওয়া শুনানিতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সংখ্যালঘু মুসলমান রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গণহত্যার এই তথ্য প্রমাণ তুলে ধরা হয়।

আবুবকর মারি তামবাদু বলেন, গাম্বিয়া দেখেছে, মিয়ানমার তাদের জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। দুর্বলদের আশা দিতে হবে। এই আদালত দুর্বলদের সেই আশা দিতে পারে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় ডেস্কের বরাত দিয়ে কক্সবাজার আরআরআরসি অফিস সিবিএন-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যার ঘটনায় ইসলামী আন্তর্জাতিক সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে আইসিজে’তে মামলা করেছে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

এর আগে, আদালতের প্রেসিডেন্ট সোমালিয়ার আবদুলকাবি আহমেদ ইউসুফ বলেন, “১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আমরা গাম্বিয়ার কথা শুনবো। ১১ ডিসেম্বর বুধবার মিয়ানমারের বক্তব্য শোনা হবে। দুই পক্ষই ৯০ মিনিট করে সময় পাবে।”

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর তিন ঘণ্টার শুনানিতে সাক্ষ্য-প্রমাণ দাখিল করার জন্যে গাম্বিয়া প্রজাতন্ত্রকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু এই শুনানিতে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করে গণহত্যার প্রমাণ পেয়েছেন বলে শুনানীতে আদালতকে জানান।

নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিজে’র আদালত সুত্র জানিয়েছে, তিনদিন এই শুনানি চলবে। ১১ ডিসেম্বর বুধবার একই সময়ে শুরু হতে যাওয়া শুনানিতে অংশ নেবেন মিয়ানমার।

শুনানির শেষ দিনে (১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় দেড় ঘণ্টার আলোচনায় অংশ নিবে গাম্বিয়া এবং বিরতির পর রাত সাড়ে ৯ টায় দেড় ঘণ্টার আলোচনায় অংশ নিবে মিয়ানমার।

১৫ সদস্য বিশিষ্ট হেগের এই আন্তর্জাতিক আদালতের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সোমালিয়ার আবদুলকাবি আহমেদ ইউসুফ এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট চীনের শুই হানকিন।

আদালতের অন্য সদস্যরা হলেন: স্লোভাকিয়ার বিচারপতি পিটার টমকা, ফ্রান্সের বিচারপতি রনি আব্রাহাম, মরক্কোর বিচারপতি মোহাম্মদ বেনুনা, ব্রাজিলের অ্যান্তোনিও অগাস্তো কানশাদো ত্রিনদাদে, যুক্তরাষ্ট্রের জোয়ান ই ডনোঘুই, ইতালির গর্জিও গাজা, উগান্ডার জুলিয়া সেবুতিন্দে, ভারতের দলবীর ভাণ্ডারি, জ্যামাইকার প্যাট্রিক লিপটন রবিনসন, অস্ট্রেলিয়ার জেমস রির্চাড ক্রার্ফোড, রাশিয়ার কিরিল গিভরগিয়ান, লেবাননের নওয়াফ সালাম এবং জাপানের ইউজি ইওয়াসাওয়া।

উল্লেখ্য, গণহত্যার মামলার শুনানিতে মিয়ানমারের পক্ষে অংশ নিতে নেদারল্যান্ডসে অবস্থান করছেন দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি। আর গাম্বিয়ার পক্ষে মামলায় অংশ নিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু।

মধ্য আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার গণহত্যার জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা পরিচালনার অভিজ্ঞতায় রয়েছে আবুবকর মারি তামবাদুর।

পাঠকের মতামত: