নিজস্ব প্রতিবেদক :: কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস সার্ভিস (এসি বাস) ‘সৈকত এক্সপ্রেস’। কক্সবাজার থেকে প্রকাশিত প্রথম নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক সৈকত’ এর স্বত্তাধিকারী ও কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবর রহমানের মালিকানাধীন পর্যটনবান্ধব এই বাস সার্ভিস বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকালে আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে যাত্রা শুরু করে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান এই বাস সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী দিনে বাস ভাড়ায় ৫০ টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে। তবে বাসটির কক্সবাজার-টেকনাফ রুটের জনপ্রতি ভাড়া ৩০০ টাকা।
জাপানের মিটসুবিশি ফুসো সিরিজের ২০২২ মডেলের ৬টি বাস নিয়ে সার্ভিসটি শুরু করা হয়েছে।
কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত হোটেলের রেষ্টুরেন্টে বাস সার্ভিসটির উদ্বোধনী অনুষ্টান করা হয়। কক্সবাজার বাস-মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান।
প্রধান অতিথি এডিএম আবু সুফিয়ান তাঁর বক্তব্যে বলেন, যারা বড় বড় পরিবহণের সাথে যুক্ত রয়েছেন তারাই স্মার্ট মানুষ। আর ভবিষ্যত বাংলাদেশ হলো ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। ‘সৈকত এক্সপ্রেস’ এসি বাস সার্ভিস চালু করে সেই স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট কাজ করেছেন উদ্যোক্তা মাহবুবর রহমান।
তিনি বলেন, কক্সবাজারের পর্যটন মানেই বাংলাদেশের উন্নয়ন। যারা এই উন্নয়নের সাথে যুক্ত থাকবেন তাদের সেই ভালো কাজের সাথে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সবসময় রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান মনে করেন, ছোট গাড়ি সড়ক থেকে যত কমানো যাবে ততই একসিডেন্ট কমে যাবে। যদি পাজেরো গাড়িতে চড়ে যে সেবা আমরা পাবো সেই সেবা যদি বড় গাড়িতে পাওয়া যায় তাহলে কম খরচে কেন আমরা সেই পরিবহণের সেবা নেবো না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ইউরোপের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক কাজের প্রথম পায়ুরিটি হলো ট্যুরিজম। যেখানে টুরিষ্ট যাবে সেখানে পয়সার কোন অভাব হবে না।
তিনি বলেন, কক্সবাজার থেকে পরিবহণ খাতে হাজার বিলিয়ন টাকা নিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে ৩০টি পরিবহণ আছে। তার নব্বই শতাংশেরই মালিকানা লোহাগাড়া থেকে ওইদিকের। কক্সবাজারের কোন মালিকানা নেই।
তিনি প্রশ্ন তুলেন, কক্সবাজারের মানুষ কী মেধাশূন্য হয়ে পড়েছেন! তিনি বলেন, কক্সবাজারের মানুষ যদি পরিবহণ খাতে এগিয়ে আসলে আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।
তবে তিনি পরামর্শ দেন, চায়না ও ইন্ডিয়ান গাড়ি আনবেন না। ইন্ডিয়ান গাড়ি আনলেও চায়না গাড়ি কখনোই আনবেন না। দুই বছরের মধ্যেই এই গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।
মেয়র মুজিব কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের কথা উল্লেখ করে বলেন, একটু কাজ করে যানজট সৃষ্টি করে। আবার একটু কাজ করে আবার যানজট সৃষ্টি করে।
তিনি হাতজোড় করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে বলেন, এক বছরের মধ্যে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার কথা। সেই এক বছর কখন শেষ হবে?
তিনি পৌরসভার সড়কগুলো প্রশস্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, আমি রাস্তা বড় করবোই। তার জন্য যখন যেখানে ভাঙ্গতে হয় ভাঙ্গবো। এতে যদি আমাকে পছন্দ না হয় তাহলে মেয়াদ শেষে আমাকে ভোট দিয়েন না!
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, রাজনীতিক ও আইনজীবী এড. রনজিত দাশ, রেনকন ট্রাকস এন্ড বাসেস লিমিটেডের (মিটসুবিশি ফুসো) নির্বাহী পরিচালক সুলতান্জ্জুামান সাজন, একই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুল মোস্তফা, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপক ও এভিপি ইয়াকুব মো. শাহজাহান, কক্সবাজার ট্যুর অপারেটরস ওনারস এসোসিয়েশনের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, কক্সবাজার ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার কামাল আনু।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন ‘সৈকত এক্সপ্রেস’ এসি বাস সার্ভিসের স্বত্তাধিকারী ও দৈনিক সৈকত সম্পাদক মাহবুবর রহমান।
পরে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন, বাজারঘাটা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা কামাল উদ্দিন।
পাঠকের মতামত: