টেকনাফ সংবাদদাতা :
টেকনাফে এক স্কুল ছাত্রীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করে তাকে স্কুলের পাঠদানে পাঠাল উপজেলা প্রশাসন। গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। ছাত্রীর বয়স বিবাহের অপ্রাপ্ত বয়স্কের কারণে স্থানীয় লোকজন ও স্কুলের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে স্থানীয় সাংবাদিকদের অবহিত করা হয়।
উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের সৌদি আরব প্রবাসীর মেয়ে ও শামলাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রীর সঙ্গে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের মনখালী গ্রামের নুরুল বশরের ছেলে নুরুল আমিনের বিবাহের জন্য বিয়ের গেট, প্যান্ডেল তৈরি ও গরু জবাই করে পুরোদমে আয়োজন চলছিল। এসময় বিবাহ অনুষ্টানে দাওয়াত প্রাপ্ত লোকজন-আত্মীয়-স্বজনদের খাওয়া-দাওয়া চলছে। ঠিক তখনিই উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) তুষার আহমদের নেতৃত্বে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিবাহটি বন্ধ করে দেন। এরপর প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের আয়োজন না করার শর্তে ছাত্রীর মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে ছিলেন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. মাকসুদ আলম, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবছার।
ওই ছাত্রী বলেন, এ বিয়েতে আমি রাজি ছিলাম না। কারণ, আমি আরও লেখাপড়া করতে চায়। জোর করে বিয়ের আয়োজন করা হয়। কিন্তু তার বিয়ে বন্ধ করার জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনসহ সকলকে ধন্যবাদ জানায়।
ওই ছাত্রীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মঞ্জুর বলেন, ওই মেধাবী ছাত্রীর অল্প বয়সে বিয়ে হচ্ছে শুনে তিনি মর্মাহত ছিলাম। উপজেলা প্রশাসন আজ যে কাজটি করেছে তাতে করে এলাকায় আলোচনার ঝড় চলছে এবং চলবেই। আর কোন ছাত্রীর প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত কোনো অভিভাবক বিয়ের আয়োজন করবে না। এ ঘটনাটি টেকনাফের জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ কববে বলে আমি মনে করি।
উপজেলা নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রট ও সহকারি কমিশনার (ভুমি) তুষার আহমদ বলেন, স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে ওই ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে পুরো বিবাহের আয়োজন বন্ধ করে দিয়ে ছাত্রীকে স্কুল পোশাক পড়িয়ে পাঠদানের উদ্দেশ্যে স্কুলে আনা হয়। ওই সময় স্কুলে সহপাঠিরা উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়। বাল্যবিবাহের কুফরের কথা উল্লেখ্য করে সকল শ্রেণি কক্ষে সচেতন হওয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
পাঠকের মতামত: