ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

শপথ নেয়ার দুইদিন পরই

ফাঁসিয়াখালী ইউপির গেইটে থাকা সাবেক চেয়ারম্যান-সদস্যদের নামফলক মুছে দিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: শপথ নেয়ার দুইদিন পর ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের গেইটে থাকা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নামফলক মুছে দিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী। গতকাল শনিবার বিকাল ২টার দিকে তিনি পরিষদে এসে এ নির্দেশেনা দেন কর্মচারীদের। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের গেইট থেকে সাবেক চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নামফলক উঠিয়ে ফেলছে।

প্রত্যক্ষদর্শরীরা জানান, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান গেইটে সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ও তার পরিষদের ১২ জন নারী-পুরুষ সদস্যের পাশাপাশি সচিবের নাম রয়েছে। সেখানে টাইলস দিয়ে নাম ফলক দেওয়া হয়েছে। ২৭ জানুয়ারি বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী শপথ নিয়েছেন। শপথ নেওয়ার দুইদিন পর ২৯ জানুয়ারি পরিষদে গেলে গেইটে থাকা সাবেক চেয়ারম্যান ও আগের পরিষদের নারী ও পুরুষদের নাম ফলক মুছে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন সচিবকে। সচিব যথা সময়ে না করায় শনিবার বিকাল ২টার দিকে চেয়ারম্যান হেলাল নিয়ে এসে কয়েকজন মেস্ত্রীর নিয়ে নামফলক উঠিয়ে ফেলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাবেক পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্নমহলে।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ও পরিষদের সকল মেম্বারদের সম্মতিতে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ২০১৮ সালে ইউনিয়ন পরিষদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষে একটি গেইট নির্মাণ করা হয়। সেখানে চেয়ারম্যান, মেম্বার, মহিলা মেম্বার ও ইউপি সচিবের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়।

বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী ঈর্ষান্তিত হয়ে পরিষদের সকল সদস্যদের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। ২৯ জানুয়ারি শনিবার সকালে নিজে উপস্থিত থেকে প্রধান ফটকের উপরিভাগ ভেঙ্গে ফেলে।

পরিষদের গ্রাম পুলিশ প্রধান নাজেম উদ্দিন বলেন, গেইট ভাংচুর বিষয়ে আমি গ্রাম পুলিশের কাছে জানতে চাইলে তারা চেয়ারম্যানের (হেলাল) নির্দেশে ভাঙছে বলে জানতে পারি। তিনি আরও বলেন, উল্টো আমাকে ধমক দিয়ে গেইট আমি ভাঙতে বলেছি, তুমি চৌকিদারদের জিজ্ঞেস করার কে?
ইউনিয়ন পরিষদ সচিব নুরুল কবির বলেন, ২৭ জানুয়ারি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন শপথ পরবর্তী আমাকে মোবাইল ফোনে গেইটের উপরিভাগ ভেঙে ফেলতে বলেছিলেন। তখন আমি ওনাকে বলি এটি পরিষদের এক্তিয়ার। আপনি দায়িত্ব নিয়ে প্রথম বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন এটি ভাঙতে পারবেন। চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত থেকে নাম মুছে ফেলেন।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন শপথ নিলেও এখনো দায়িত্বভার গ্রহণ করেনি। এখনো আমার পরিষদের মেম্বারগণসহ আমি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। এমতাবস্থায় পরিষদের কোন অনুমতি ছাড়া কিভাবে সরকারি অফিসের গেইট ভাংচুর করেন? গেইট ভাংচুরের বিষয়টি জানতে পেরে রাতেই পরিষদের জরুরী সভা করে গেইট ভাংচুরের নিন্দা জানিয়ে রেজুলেশন করা হয়েছে এবং আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছি।

এদিকে ফাঁসিয়াখালী ইউপির নর্বনির্বাচিত চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন বলেন, দেশের কোন ইউনিয়ন পরিষদের গেইটে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নাম রাখার নিয়ম নেই। সেই হিসেবে গেইট থেকে আগের চেয়ারম্যান ও মেম্বার নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ফলক নির্মাণ ও সংস্কার কাজ শুরু করছি। আমি কোন অন্যায় কাজ করেনি। গেইটের মধ্যে বিছমিল্লাহ ও ৮নং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের নাম থাকবে।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, গেইটের নেইম ফলক ভাঙার বিষয়টি জানতে পেরেছি। চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন হেলালী শপথ নিলেও তিনি এখনো দায়িত্ব ভার গ্রহণ করেননি। তাই তিনি নেইম পলক সরিয়ে বে-আইনি কাজ করেছেন।

ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের লিখিত রেজুলেশন সহ লিখিত অভিযোগ পেলে, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত: