এম.আর মাহমুদ, চকরিয়া ::
ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি তৃণমূল প্রতিষ্ঠানের নাম। এটি ইউনিয়নবাসীর তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদ। কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত সম্পদ নয়। জনগণের ভোটে প্রতি ৫ বছর পর পর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা নির্বাচিত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে জনপ্রিয় অনেক জনপ্রতিনিধি বার বার নির্বাচিত হওয়ার নজিরও রয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পরিবর্তনও হয়। ফলে চেয়ারম্যান আসে, চেয়ারম্যান যায়।
সেক্ষেত্রে বলতে হয় এ প্রতিষ্ঠানটি কোন ব্যক্তির মৌরুশী সম্পত্তি নয়। চেয়ারম্যান মেম্বারের পরিবর্তন হতে পারে, পরিষদ ভবনের পরিবর্তন হয় না। কেয়ামত পর্যন্ত হওয়ার সম্ভাবনাও নাই। তবে পরিষদ ভবনের উন্নয়ন, সৌন্দর্যবর্ধন সবই হতে পারে। তাই পরিষদের গেইট নির্মাণ করে সেখানে কোন চেয়ারম্যানের নাম খোদাই করে রাখার কোন যৌক্তিকতা আছে বলে কেউ মনে করে না।
বিশেষ করে বলতে হয় কক্সবাজার জেলা পরিষদের একটি গেইট রয়েছে। চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা উত্তর হারবাং (আজিজনগর এলাকায়) কক্সবাজার জেলা পরিষদ। কোন চেয়ারম্যান বা প্রশাসকের নাম নেই। আবার অনেক ইউনিয়ন পরিষদের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য গেইট নির্মাণ করা হয়েছে শুধুমাত্র পরিষদের নাম ও ঠিকানা দিয়ে।
সমস্যা হচ্ছে যারা জনগণের ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তারা মনে করেন পরিষদের গেইট তাদের পৈতৃক সম্পদ। তাই গেইটে নিজের নাম খোদাই করতে বিবেকে বাঁধে না। তবে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একটি বোর্ড থাকে ওই বোর্ডে অতীতে নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের নামও লিখা থাকে। যা প্রতিটি ইউনিয়নে বিদ্যমান আছে। না বলে উপায় নাই অনেকে ক্ষমতায় আসার পর পর অতীতের চেয়ারম্যানদের অনেক স্মৃতি ধ্বংসে তৎপর হয়। যা কখনও কল্যাণকর নয়। কারণ চিরদিন কারো সময় সমান নাহি যায়।
লেখাটি অবতারণার কারণ একটি চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন হেলাল উদ্দিন হেলালী। তিনি শপথ গ্রহণের পর পরই সাবেক বেশক’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীসহ মেম্বারদের নাম সম্বলিত নাম অপসারণের কাজ চলছে। গেইট থেকে চেয়ারম্যান মেম্বারদের নাম অপসারণের দৃশ্যটি দেখে খারাপ লেগেছে কারণ গেইটে নাম খোদাই কালে যে অর্থ ব্যয় হয়েছিল সে অর্থ কারো ব্যক্তিগত অর্থ নয়, জনগণেরই ট্যাক্সের টাকা। তাই জনগণের ট্যাক্সের টাকা নষ্ট করার অধিকার চেয়ারম্যান, মেম্বারদের আছে কি?
অতএব করার আগেই চিন্তা করলে হয়ত পরবর্তীতে খোদাই করা নাম অপসারণে হাতুড়ীর আঘাত লাগাত না? যা অপমাণ জনক নয় কি? গ্রামের একটি প্রবাদ বলেই আমি লেখাটির ইতি টানবো ‘যারা ক্ষমতায় যায় তারা সতীনের দিনের কলাগাছও রাখতে রাজি নয়।’
পাঠকের মতামত: