ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় যুবককে চাকুরী দেওয়ার নামে লাখ টাকা হাতিয়ে নিলো সেই আনিসুল!

পেকুয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে মাস্টাররোলে ‘অফিস সহায়ক’ পদে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে এক যুবকের কাছ থেকে ১লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের বিতর্কিত নলকুপ মেকানিক আনিসুল ইসলামের বিরুদ্ধে! এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে গতকাল ৬ অক্টোবর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীর দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারণার শিকার যুবক মোশারফ হোছাইন।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে নলকুপ মেকানিক পদে বিগত ১১ বছর ধরে কর্মরত রয়েছে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ এলাকার বাসিন্দা আনিসুল ইসলাম। দীর্ঘ এক যুগের কাছাকাছি পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসে নলকুপ মেকানিক পদে কর্মরত থাকার সুযোগে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজনের সাথে বিশেষ পরিচিত লাভ করেন আনিসুল! এছাড়াও নলকুপ বাণিজ্য, টাকার বিনিময়ে একজনের নামে অনুমোদিত টিওবওয়েল অন্যজনকে তালিকাভুক্তি করে বিক্রি, প্রবাসী ও স্বচ্ছল পরিবারের মাঝে সরকারী পাকা লেট্রিন নির্মাণ করে দেওয়া, ঘুষ বাণিজ্য, কর্মস্থলে ঘুষের টাকায় জমিক্রয়, স্থানীয় হিঁচকে চোর, মাদকসেবীদের সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপনসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা আনিসুল জড়িয়ে পড়েনি! এতকিছুর পরও পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের নলকুপ মেকানিক আনিসুল ইসলামের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে কোন ধরনের শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পেকুয়া শহীদ জিয়া বিএমআই কলেজের সাবেক ছাত্র ও চকরিয়ার বাসিন্দা মোশারফ হোছাইন অভিযোগ করেছেন, পেকুয়া শহীদ জিয়া বিএমআই কলেজে পড়াখালীন সময়ে গত ২/৩ বছর পূর্বে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারী আনিসুল ইসলামের সাথে তার পরিচয় হয়। পেকুয়া উপজেলা পরিষদে অবস্থিত উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিস ও পেকুয়া বিএমআই কলেজ পাশাপাশি। পরিচয়ের সুবাধে কলেজ টাইমের পরে আনিসুল ইসলামের সাথে প্রায় সময় উপজেলায় দেখা হতো। এক পর্যায়ে আমাকে একটা চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিতে বলি। পরে আমাকে পেকুয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে ‘অফিস সহায়ক’ পদে মাস্টার রোলে চাকুরী দিতে পারবেন মর্মে জানায়। এরজন্য আমার কাছ থেকে খরচের কথা বলে এক লাখ টাকা দাবী করেন।

ভুক্তভোগী মোশারফ হোছাইন আরো জানায়, আনিসুল ইসলামের কথামতো আমার পরিচিত হওয়ায় সহজে বিশ্বাস করে ধারদেনা করে গত ২২/০৭/২০২১ ইংরেজী তারিখ আমার কয়েকজন আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের স্বাক্ষী রেখে আনিসুল ইসলামকে এক লাখ টাকা এবং আমার ছবি সম্বলিত বায়োডাটা তুলে দিই। টাকা নেওয়ার সময় আমাকে বলে যে, এক মাসের মধ্যে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসে অফিস সহায়ক পদে আমার মাষ্টার রোলের চাকুরী হয়ে যাবে। কিন্তু মাসের পর মাস যায় আমার চাকুরী হয়না। আনিসুল ইসলামও আমার সাথে আর দেখা করেনা। ফোন দিলেও রিসিভ করেনা। চাকুরী দিতে না পারলে টাকাগুলো ফেরৎ দেওয়ার জন্য বলি। তিনি টাকাগুলো আজ দিবেন, কাল দিবেন বলে বলে কালক্ষেপণ করছে।

প্রতরণার শিকার মোশারফ হোছাইন কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি একজন গরীব মানুষ। বর্তমানে আমি লামা মাতামুহুরী ডিগ্রি কলেজে অধ্যায়ণরত আছি। চাকুরী দেওয়ার নামে আমার সাথে সরল বিশ্বাসে প্রতারণা করেছে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের নলকুপ মেকানিক আনিসুল ইসলাম। তার কাছ থেকে আমার টাকাগুলো উদ্ধারের জন্য কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য অফিসের প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। ভুক্তভোগী মোশারফ হোছাইন চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা এলাকার লিটন শরীফের ছেলে।

অভিযোগের ব্যাপারে পেকুয়া জনস্বাস্থ্য অফিসের কর্মচারী আনিসুল ইসলামের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল দিয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিব না করায় বক্তব্য সংযোজন করা সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: