পেকুয়ার পিছিয়ে পড়া যে কয়টি গ্রাম রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো উপজেলা শীলখালী ইউনিয়নের আলী চাঁন্দ মাতবর পাড়া। অন্ধকারাচ্ছন্ন পাহাড়ঘেরা এ গ্রামে বিদ্যুত পৌছেছে মাত্র কয়েক বছর আগে। মাটির উর্বরতা আর স্থানীয়দের উদ্ভোবনী মানসিকতার কারণে এখন এলাকাটি পরিণত হয়েছে উপজেলার সবচেয়ে সমৃদ্ধ এবং উৎপাদনশীল এলাকায়। এলাকার অধিকাংশ মানুষ শ্রমজীবি ও কৃষক। গ্রামের দরিদ্র এসব কৃষক পরিবারগুলোর ঘরে এখন থেকে জ্বলবে গ্যাসের চুলাও। এটা কোন ধরণের লাইনের গ্যাস নয় নিজেদের তৈরী বায়োগ্যাস। তাও আবার মুরগীর বিষ্টায় দিয়ে উৎপন্ন হবে এ গ্যাস। নতুন নতুন উদ্ভাবন করে ইতিমধ্যে সবার দৃষ্টি কেড়েছে পেকুয়ার সবচেয়ে বড় খামার বনানী পল্লী। তার মধ্যে অন্যতম হল মুরগীর বিষ্টায় বায়োগ্যাস প্রকল্প। এতদিন খামারের মুরগীর বিষ্টা গুলো যত্রতত্র রাখার কারণে এলাকার পরিবেশ দূষিত হতো মারাত্মকভাবে। এখন এই মুরগীর বিষ্টাগুলো পরিবেশ দূষণের কারণ হিসেবে নয় মুরগীর বিষ্টা দিয়েই তৈরী হবে গ্যাস এবং সে গ্যাস সরবরাহ করা হবে আশেপাশের ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে । এমনি একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ নিয়ে পেকুয়ায় প্রথম উৎপাদন শুরু করলো শীলখালীর বনানী পল্লী। ু ‘সৃষ্টির সেবায় ¯্রষ্টার সন্তুষ্টি’ এ স্লোগান নিয়ে প্রকল্পটি শুরু করেছে পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের আলী চান্দ মাতবর পাড়া গ্রামে অবস্থিত সমন্বিত খামার ‘বনানী পল্লী’। মাদার গ্রুপের তত্বাবধানে পরিচালিত বনানী পল্লী তৈরী করেছে ২৫ কিউবি ও ৩৫ কিউবির ২ টি বায়োগ্যাস প্রকল্প। খামারের ৪ হাজার মুরগীর বিষ্টা দিয়ে চালানো হবে ২৫ কিউবির বায়োগ্যাস প্রকল্পটি। এতে উৎপাদিত গ্যাস দিয়ে চলবে ৪০ টি চুলা। আর তা সরবরাহ করা হবে ৫ কিলোমিটার এলাকজুড়ে। ৬ হাজার মুরগীর দৈনিক বিষ্টা দিয়ে চালানো হবে ৩৫ কিউবির বায়োগ্যাসটি। আরো ৫ কিলোমিটার এলাকায় জ্বলবে ৬০ টি চুলা। ২ টি প্রকল্পে উৎপাদিত গ্যাস ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১০০ টি পরিবার সমহারে ব্যবহার করতে পারবে জানান বনানী পল্লীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী।
প্রকল্পটি উদ্বোধনী উপলক্ষে বনানী পল্লির সদর দপ্তরে ৪মার্চ এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে চুলা জ্বালিয়ে প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ড. অনুপম সাহা। এসময় উপস্থিত ছিলেন পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মারুফুর রশিদ খান, কক্সবাজার জেলা সমবায় কর্মকর্তা বখতিয়ার কামাল, বনানী পল্লীর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন চৌধুরী, মাদার গ্রুপের চেয়ারম্যান মেফতাহ উদ্দিন, বনানী পল্লীর সিইও মেসবাহ উদ্দিন, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আলগীর হোসেন, এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর আবদুর রহমান।
পাঠকের মতামত: