ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বর্ণবাদী হামলায় নিহত একজন মুসলিম ছাত্রের বোন তার মুখোমুখি হওয়ার জন্য সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন। ট্রাম্প মুসলমানদের হত্যা করার আহ্বান জানানোর পর এই চ্যালেঞ্জ জানালেন তিনি।
সাউথ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের চার্লসটনে শুক্রবার এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরোক্ষভাবে শুকরের রক্তে ডোবানো বুলেট দিয়ে মুসলমানদের হত্যা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় সান ফ্রান্সিসকোর পদার্থবিদ ড. সুজানা বারাকাত বলেছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের পাশাপাশি তার মুসলিম বিরোধী আগের বাগাড়ম্বরগুলো আমেরিকায় এমন একটি পরিবেশ তৈরি করেছে যার পরিণতিতে অনেক রক্তক্ষয় ঘটতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার তার ভাষণে সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে জেনারেল জন পারশিং নামে কথিত একজন সাবেক সেনাপ্রধানের কথা উল্লেখ করেন; যদিও ইতিহাসে এই নামে কোনো জেনারেলের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।
ট্রাম্প দাবি করেন, জেনারেল পারশিং ৫০ জন মুসলিম জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের মধ্যে ৪৯ জনকে শুকরের রক্ত মাখানো বুলেট দিয়ে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
যুদ্ধবাজ রাজনৈতিক দল রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য এ প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা আপনারা ইতিহাস বইগুলোতে পাবেন। অবশ্য সব বইয়ে নয়, কারণ, এ ধরনের ঘটনা স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভূক্ত হোক তা অনেকে চায় না।’
২৮ বছর বয়সি সুজান বারাকাত ট্রাম্পের এই বক্তব্য শোনার পর এক টুইটার বার্তায় ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি পারলে ব্যক্তিগতভাবে আমার মুখোমুখি হয়ে বুকে হাত রেখে বলুন, আমার ভাই শাদি ও তার স্ত্রী ওই গুলিতে নিহত হওয়ার মতো কোনো অপরাধ করেছিল কিনা।’
সুজানার ভাই জিয়া শাদি বারাকাত এক বছর আগে তার স্ত্রী ইয়াসেরি আবু-সালাহ ও তার বোন রাজান আবু-সালাহ নিজ বাসভবনে এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন। নিহত হওয়ার মাত্র দুই মাস আগে বিয়ে করেছিলেন শাদি বারাকাত। নিহত তিনজনই নর্থ ক্যারিলনার একটি ডেন্টাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নর্থ ক্যারোলিনার চ্যাপেল হিল শহরের পুলিশ ওই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের প্রতিবেশী ক্রেইগ স্টিফেন হিক্সকে আটক করেছে। তিনটি ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ডের দায়ে হিক্স বর্তমানে ডারহাম শহরের একটি কারাগারে বন্দি আছে।
এ ছাড়া, সুজান নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ট্রাম্প এমনভাবে কথা বলেন যাতে মনে হয় আমেরিকার সব মুসলমান তার কেনা গোলাম। যদি তার মনোভাব সত্যিই তাই হয়ে তাহলে তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে পারেন যাতে আমরা দু’জন কিছুক্ষণ আলাপ করতে পারি। অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো সুজানের আহ্বানে সাড়া দেননি। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস
পাঠকের মতামত: