নিউজ ডেস্ক ::
তিন দিন আগেই জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেছিলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ভালো আছেন। তবে দু-একদিনের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি দেশের বাইরে যেতে পারেন।
অথচ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেই অভিযোগ করলেন, অসুস্থ হওয়ার পরও তাকে চিকিৎসা করতে এবং বাইরে যেতে দেয়া হচ্ছে না। কার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তা স্পষ্ট না করেই আলোচিত এ রাজনীতিবিদ বলেন, আমাকে ‘দমিয়ে রাখা’যাবে না।
নির্বাচন সামনে রেখে পার্টির মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরুর পর কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রকাশ্যে খুব একটা দেখা যাচ্ছিল না এরশাদকে। তার অসুস্থতার বিষয়ে জাতীয় পার্টির এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য দেয়া হচ্ছিল সাংবাদিকদের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করেই বনানীর নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে এসে গাড়ি থেকে না নেমে নেতাকর্মীদের সামনে কয়েক মিনিট কথা বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। সেখানেই তার বিস্ফোরক বক্তব্য আসে।
এরশাদ বলেন, ‘আজ বলতে এসেছি, আমাকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না, এগিয়ে যাব৷ আমার বয়স হয়েছে, চিকিৎসা করতে দেবে না; বাইরে যেতে দেবে না। মৃত্যুকে ভয় করি না।’
এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়ে এরশাদ নাটকীয় অসুস্থতা নিয়ে সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে ভর্তি থাকা অবস্থাতেই তিনি এমপি নির্বাচিত হন এবং পরে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পান।
এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে ‘অসুস্থ’এরশাদের সিএমএইচে ভর্তির খবর এলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
এ বিষয়ে গুঞ্জনের মধ্যেই জাতীয় পার্টির জোটসঙ্গী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গত মাসের শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এরশাদের অসুস্থতা ‘রাজনৈতিক’নয়; তিনি ‘সত্যিই’অসুস্থ। তাকে দু-একদিনের মধ্যে সিঙ্গাপুরে নেয়া হতে পারে।
কিন্তু জাতীয় পার্টির তখনকার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি উপস্থাপন করেন ভিন্নভাবে। তিনি বলেন, এরশাদের অসুস্থতা ‘এমন কিছু নয়। তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন।
এরপর জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিব ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা গত ৩ ডিসেম্বর (সোমবার) বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ভালো আছেন তবে দু-একদিনের মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি দেশের বাইরে যেতে পারেন।
এর একদিন পর মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নতুন মহাসচিব রাঙ্গা বলেন, রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যাওয়ার পর শারীরিক অবস্থা নিয়ে এরশাদ ‘ভয়ে থাকেন’। এ কারণে তাকে হাসপাতালে যেতে হয়। ঘুমের ডিস্টার্ব হলেও তিনি সিএমএইচে যান। বাসায় একা থাকেন বলে তার একলা লাগে, ভয় করে। তাছাড়া ইনফেকশনের ভয়ও আছে।
নতুন মহাসচিব দাবি করেন, এরশাদ এখন ‘হান্ড্রেড পারসেন্ট ফিট’ থাকলেও চিকিৎসার জন্য তার দেশের বাইরে যাওয়া জরুরি।
পাঠকের মতামত: