ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফ থানা থেকে মধ্যরাতে ছাড়া পেল অস্ত্র-ইয়াবা মামলার আসামী

Arms-yaba_todatবিশেষ প্রতিবেদক :

টেকনাফে অস্ত্র ও ইয়াবা মামলার এজাহার ও চার্জসীটভূক্ত মো: সলিম প্রকাশ সেলিমকে গ্রেফতারের পর মোটা অংকের বিনিময়ে ছেড়ে দিল ওসি আবদুল মজিদ। সূত্রে জানা যায়, ১৫ জুন বুধবার দুপুরে থানার এএসআই আলমগীরের নেতৃত্বে সদর ইউনিয়নের কেরুণতলী প্রাইমারী স্কুলের সামনে থেকে টেকনাফ পৌরসভার নাইট্যংপাড়া এলাকার মনু মিয়ার ছেলে মো: সলিম প্রকাশ সেলিমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এব্যাপারে ১৬ জুন দৈনিক কক্সবাজার, বাঁকখালী,সকালের কক্সবাজার, টেকনাফ নিউজ ডটকম ও টেকনাফ নিউজ ৭১ ডটকমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন ওসি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারী সন্ধ্যায় সাড়ে ৬ টার সময় গোপন সংবাদে খবর পেয়ে তৎকালীন থানার ওসি মো: আতাউর রহমান খোন্দকার, এসআই আলমগীর, এএসআই মো: সেলিম উদ্দীন, এএসআই জহির আলমসহ পুলিশের একটি টিম টেকনাফ সদর ইউনিয়নের তুলাতুলী ঘাটস্থ সাগরপাড়ে অভিযান চালিয়ে মো: সিদ্দিক নামে একজনকে আটক করে। এসময় আরো ৩ জন পালিয়ে যায়। আটক ব্যক্তির কাছ থেকে ৪০ হাজার ইয়াবা, ঘটনাস্থলের আশেপাশ থেকে পালিয়ে যাওয়াদের ফেলে দেওয়া দু’টি দেশীয় তৈরী এলজি, ১০ রাউন্ড কার্তুজ ও একটি চোরা উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় এএসআই মো: সেলিম উদ্দীন বাদী হয়ে আটক ব্যক্তি নতুন পল্লানপাড়ার মৃত লাল মিয়ার ছেলে মো: সিদ্দিক প্রধান করে পুরান পল্লানপাড়ার সিরাজ মেম্বারের ছেলে মো: রফিক, মৃত কালা মিয়ার ছেলে ফিরোজ ও নাইট্যংপাড়ার সলিম নামে পলাতক আসামী করে টেকনাফ থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দু’টি মামলা রুজু হয়েছিল। যার নং- ৬২ ও ৬৩। তাং ২৩-০১-২০১৫ইং।
এ দু’টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় এসআই মো: আলমগীর হোসনকে। তদন্ত কর্মকর্তা দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৪ জানুয়ারী ফিরোজকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেন ও মো: রফিক কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলায় আটক হওয়ায় ২৬/০৩/২০১৫ ইং তারিখে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

ধৃত আসামী মো: সিদ্দিককে দুই দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভিন্ন স্বাক্ষীদের সাথে কথা বলে ১নং মো: সিদ্দিক (২৭) পিতা Ñ মৃত লাল মিয়া সাং- নতুন পল্লানপাড়া, ২নং ফিরোজ (৩২)পিতা Ñ মৃত কালা মিয়া, ৩নং মো: রফিক (২৫) পিতা -সিরাজ মেম্বার, উভয়সাং – পুরান পল্লানপাড়া, ৪ নং মো: সলিম প্রকাশ সেলিম(৩০), পিতা -মনু মিয়া, সাং- নাইট্যংপাড়া, ১ নং ওয়ার্ড,টেকনাফ পৌরসভা উল্লেখ করে আদালতে চাজর্সীট দেওয়া হয়েছে।

টেকনাফ থানার মামলা নং- ৬২, অভিযোগপত্র নং- ২৫২/তাং ৩১-০৫-২০১৫ইং। ধারা ১৯৯০ সনের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন ০৪,১২এর ১৯ (১) টেবিল ৯ (খ)২৫। এবং উল্লেখিত আসামীদের নাম উল্লেখ করে আরেকটি চাজর্সীট দেওয়া হয়েছে। যার মামলা নং-৬৩। অভিযোগপত্র নং- ২৮০/তাং ০২-০৬-২০১৫ইং। ধারা ১৮৭৮ সনের অস্ত্র আইনের ১৯ এ। এ দু’টি মামলার আসামী হওয়া সত্বেও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরেও কিভাবে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিল টেকনাফ থানার ওসি।

এরপর এ ঘটনা জানাজানি হলে গতকাল সন্ধ্যায় থানার এসআই শেফায়েত আলমের নেতৃত্বে সলিম উল্লাহ নামে এক নিরীহ জেলেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সে নাইট্যংপাড়ার জেলে মো: কাশেমের ছেলে। তাহাকে মনু মিয়ার ছেলে সলিম উল্লাহ সাজিয়ে ঐ মামলায় গ্রেফতার দেখাতে চেয়েছিল। কিন্তু টেকনাফের কয়েকজন সাংবাদিকদের চাপের মুখে আইডি কার্ড, ভোটার তালিকা প্রর্দশন করে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলেও তার পরিবারের লোকজনের গভীর রাতে কাছ থেকে এসআই শেফায়েত আলম ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

টেকনাফ থানার ওসি আবদুল মজিদ এ ব্যাপারে বলেছেন, পুলিশ অস্ত্র ও মাদক মামলার পলাতক আসামী সেলিম মনে করে আটক করেছিল। কিন্তু সেই সেলিম আসল না হওয়ায় পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অপরদিকে উখিয়া সার্কেলের এস,এস,পি আবদুল মালেক মিয়া বলেছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

 

পাঠকের মতামত: