ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

টেকনাফ-কক্সবাজার: ২৯ কি.মি সড়কে দুই শতাধিক খানাখন্দক

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম :: রোহিঙ্গাদের জন্য হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক যাতায়াতের ধকলে টেকনাফ-কক্সবাজার শহীদ এটিএম জাফর আলম আরাকান সড়কের ২৯ কিলোমিটারে বড় বড় দুই শতাধিক খানাখন্দক সৃষ্টি হয়েছে। এতে সড়কে যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা কুতুপালং, থাইংখালী, বালুখালী, পালংখালী, উনছিপ্রাং, লেদা ও নয়াপাড়াতে আশ্রয় নেয়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দৈন্যদশা শুরু হয়। রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক, দেশীয় এনজিও ও দাতাসংস্থার হাজার হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক যাতায়াতের কারণে সড়ক চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে।

হোয়াইক্যং নয়াবাজার, নয়াপাড়া, মিনাবাজার, খারাংখালী, হ্নীলা মৌলভীবাজার, মোচনী, নাইট্যংপাড়া, কেরুনতলী এলাকায় প্রায়সময় পণ্যবাহী ট্রাক বড় বড় খানাখন্দকে পড়ে উল্টে যায়। এই মহাসড়কে যান চলাচল বেড়ে যাওয়ায় তীব্র যানজটও হচ্ছে। এতে দু’পাশে শতশত যানবাহন আটকা পড়ে ও যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হয়।

কক্সবাজার-উনছিপ্রাং পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নকাজ চলছে। উনছিপ্রাং-টেকনাফ পর্যন্ত বাকি ২৯ কিলোমিটার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হওয়ার পরও সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর।

অনুসন্ধানে জানা যায়, রোহিঙ্গা শিবিরে কর্মরত আছেন ২ হাজার বিদেশিসহ অন্তত ১১ হাজার চাকরিজীবী। এতে ব্যবহার হচ্ছে ২ হাজারের বেশি প্রাইভেট গাড়ি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পসমূহে দৈনিক গড়ে মালামাল পরিবহন হচ্ছে ৪ শতাধিক ট্রাকে। এছাড়া টেকনাফ সীমান্ত বাণিজ্যে আমদানি-রপ্তানির ট্রাক, পর্যটকদের গাড়ি, যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে আরও এক হাজারের বেশি।

ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, অটোরিকশা, জিপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলে আরো ৭ হাজার। মেরিন ড্রাইভ সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ থাকায় আরাকান সড়কে চাপের কারণে সৃষ্টি হয়েছে বেহাল দশা। উপজেলায় স্থানীয় প্রায় ৩ লক্ষ লোকের সঙ্গে আরও ২ লক্ষ রোহিঙ্গা সেখানে বসবাস করছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে গত ৩ বছর আগেও ৫ হাজার যানবাহন চলাচল করতো। কিন্তু রোহিঙ্গা আসার পর এখন ১০ হাজারের অধিক ভারী পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করায় পুরো সড়কটিতে খানাখন্দক ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ মাঝে মধ্যে এসব খানাখন্দকে ইট ও বালি দিয়ে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করলেও তা ঘণ্টার বেশি স্থায়ী থাকে না। তাই সড়কটির বেহাল দশা কাটছে না।

সিএনজি সমিতির সভাপতি দিল মোহাম্মদ বলেন, এ সড়কে গত ১৫ বছর ধরে গাড়ি চালিয়ে আসছি। সড়কের বেহাল দশা এবারের মতো আর কখনো হয়নি। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকেই আমাদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

জেলা আ.লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক এইচএম ইউনুছ বাঙ্গালী চকরিয়া নিউজকে বলেন, রোহিঙ্গারা আসার পর আমরা শুধু অর্থনৈতিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হইনি। বিগত দিনে আমাদের এলাকায় অবকাঠামোগত যে উন্নয়ন হয়েছিল সেগুলোও ধ্বংস হয়েছে। অবাধে ত্রাণের ও এনজিওদের গাড়ি চলাচলের কারণে রাস্তাগুলো নষ্ট হয়েছে। এ জীবনে এত যানজট ও রাস্তার বেহাল দশা এখানে আগে দেখিনি।

 

 

পাঠকের মতামত: