টেকনাফ প্রতিনিধি ::
রোহিঙ্গা ডাকাতের আস্তানা থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় কৌশলে পালিয়ে এসেছে এক যুবক।
পালিয়ে আসা যুবক হলেন টেকনাফ পৌর এলাকার নাইট্যংপাড়া গ্রামের মোঃ কাসেমের ছেলে নুরুল আফছার (১৮)। ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে ডাকাত দলের পাহাড়ী আস্তানা থেকে অপহৃত যুবক পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়। পরে এলাকাবাসী তাকে টেকনাফ থানায় নিয়ে যায়। বর্তমানে সে থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মঈন উদ্দিন খাঁন জানান, ডাকাতের কবল থেকে কৌশলে পালিয়ে আসা এক যুবক থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
পালিয়ে আসা যুবক সাংবাদিকদের বলেন ‘বুধবার রাত ৯টার দিকে রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিমের নেতৃত্বে ৪ জন অস্ত্রধারী নাইট্যংপাড়ার নিজ বাড়ী থেকে তাকে অস্ত্র ঠেকিয়ে চোখ বেঁধে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ী আস্তানায় নিয়ে যায়। এসময় বাড়ীর লোকজনের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। নইতো আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকী প্রদান করে। ডাকাতরা তাকে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করে এবং একটি গাছের সাথে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। সারা রাত ওই অবস্থায় থাকার পর সকাল ৮টার দিকে প্র্কাৃতিক ডাকে সাড়া দেওয়ার কথা বললে ডাকাতরা তাকে শেকলে বাঁধা অবস্থায় জঙ্গলের একপাশে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কৌশলে ডাকাতদের ফাঁকি দিয়ে তালাবদ্ধ শিকলসহ বাড়ীতে পালিয়ে আসি’। পরে অভিভাবক ও এলাকাবাসী হাকিমের আস্থানা থেকে পালিয়ে আসা যুবক আফছারকে টেকনাফ মডেল থানায় নিয়ে যায়।
সে আরও বলেন ‘বছরখানেক আগেও আমার বড়ভাই তোফাইলকে এই হাকিম ডাকাত অপহরণ করেছিল। এখনো তার হদিস মিলেনি। ওই ঘটনায় হাকিম ডাকাতের বিরুদ্ধে নিখোঁজ তোফাইলের মামা মোঃ জহির বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাও তুলে না নিলে তারও লাশ পড়বে বলে বাড়ীতে হুঙ্কার দিয়ে যান’।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই ভয়ংঙ্কর রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার আবদুল হাকিমের অপরাধের শেষ নেই। দীর্ঘদিন ধরে সে টেকনাফ উপজেলা কমপ্লেক্স সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে স্বশস্ত্র ডাকাতদল গঠন করে খুন, গুম, অস্ত্র লুঠ, ডাকাতি ও ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা অপরাধ সংঘঠিত করে আসছে। তার বিরুদ্ধে প্রায় এক ডজনের বেশী মামলা রয়েছে। বছর খানেক আগে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সদর ইউনিয়নের সভাপতি সিরাজুল ইসলামকে বাড়ীতে ঢুকে হত্যাসহ একাধিক হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার পালিয়ে আসা অপহৃত আফছারের বড় ভাই তোফাইল আহমদকে বছর খানেক আগে আপহরণ করে নিয়ে যায় এই হাকিম বাহিনী। সেই থেকে নিখোঁজ রয়েছে তোফাইয়েল। ইতিমধ্যে বিজিবি, র্যাবসহ আইনশৃংখলা বাহিনী হাকিম ডাকাতের আস্তানায় একাধিক অভিযান চালিয়ে কয়েকজন সহযোগীকে অস্ত্রসহ আটক করে কারাগারে পাঠালেও দূর্ধর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম এখনো অধরা রয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ উপজেলা আইন শৃংখলা কমিটির সভায় বহুবার আলোচনা এবং আটকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।
পাঠকের মতামত: