ঢাকা,বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

জেলা ছাত্রদল পেকুয়ায় ব্যর্থ কমিটি দিয়ে সম্মেলনের চেষ্টা

index-2বিশেষ প্রতিনিধি :      

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ভেঙ্গে পড়েছে। আহবায়ক যুগ্ম আহবায়কের নাম ঘোষনা করার ১৮ মাস অতিক্রম হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। যোগ্য, দক্ষতা, ত্যাগি রাজনৈতিক মেধাবী নেতৃত্বের অভাবে সংগঠনটিতে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। যুগের পরিবর্তনের কারনে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের নেতারা পেকুয়ায় যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্টা করতে ব্যর্থ হয়। ছাত্রদলের তৃণমুলের কর্মীরা জানান, যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে ছাত্রদলের এখন রাজনৈতিক শূণ্য একটি দলে পরিণত হয়েছে। দলকে সু-সংগঠিত করতে হলে অবশ্যই যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। অন্যথায় পেকুয়াতে এ দলটি ভবিষৎত অনিশ্চয়তায় মুখে পড়তে যাচ্ছে নিঃ সন্দেহে বলা যায়। অপরদিকে জেলা ছাত্রদলের ব্যর্থ আহবায়ক কমিটি দিয়ে সম্মেলনের চেষ্টায় সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের নেতারা কামরান জাদিদ মুকুটকে আহবায়ক ও আহসান উল্লাহকে যুগ্ম আহবায়ক করে দুই সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করে। এই কমিটি কয়েক মাস যেতে না যেতেই হঠাৎ করে উপজেলা বিএনপির সুপারিশ ক্রমে আহবায়ক কমিটি বর্ধিত করে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট করা হয় যে কমিটিতে জায়গা পান নবীন ও প্রবীনেরা। কিন্ত সেই কমিটিতে সিনিয়র জুনিয়র নিয়ে ছিল চরম বিতর্ক। সেই থেকে বিতর্ক রুপ পায় গ্রুপিং এ। ফলে দুইটি বিশাল গ্রুপের জন্ম হয় একটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন আহবায়ক মুকুট অন্যটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহ। এভাবে দুইটি  গ্রুফ একে অপরের সাথে দা কুমডার মতো সম্পর্ক সৃষ্টি করতে থাকেন। ফলে আগামী ২০ মে পেকুয়া উপজেলা ছাত্র দলের সম্মেলনে দুই গ্রুফের মধ্যে একটি গ্রুপ সম্মেলনে উপস্থিত না হবে বলে ও আভাস দিয়েছেন সাংবাদিকদের।
এক পর্যায়ে পেকুয়ার অন্যতম কলেজ পেকুয়া জিয়া কলেজের ছাত্রদলের কমিটি করা হয় উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মুকুটের নেতৃত্বে । কমিটিতে হানিফ কে সভাপতি ও রাজুকে সাধারন সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। ঘোষণা তার পরদিন হানিফ পেকুয়া চৌমুহনীতে এসে সাধারণ সম্পাদক রাজুর সাথে বাক বিতন্ডা হলে মারামারি সংঘটিত হয় এতে হানিফ আহত হন। এরপর শুরু হয় তুমুল গ্রুফিং আহবায়ক হঠাৎ করে রাজু সহ পেকুয়া সদর ছাত্রদলের কয়েক জন নেতাকর্মীকে  বহিস্কার করেন। তার পর রাজুর নেতৃত্বে বহিস্কৃত ছাত্রনেতারা আহবায়ক কে  মানে না মানবে না বলে শ্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আহবায়ক মুকুট কোন ঠাসা হয়ে পড়েন। তার পর তিনি রাগের মাথায় মগনামা ও রাজাখালীতে আহবায়ক কমিটি ঘোষনা করেন। যা পরে আরো বিতর্কের জন্ম দেয়। সেই থেকে পেকুয়া উপজেলার ৮টি ইউনিটে আর কমিটি ঘোষনা করতে পারেনি। তার ফলে বিএনপির দূর্গ বলে খ্যাত পেকুয়া উপজেলায় ছাত্রদল চরম  ইমেজ সংকটে পড়েন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলায় ৮টি ইউনিয়ন, দুইটি কলেজ, ৮টি মাদ্রাসা ১০টি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। কিন্ত এসব ইউনিটে পেকুয়া উপজেলা ছাত্রদল কমিটি ঘোষনা করতে চরম ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছেন। এই ব্যার্থ কমিটি নিয়ে ২০ মে পূর্ণ সম্মেলন ঘোষনা দেয়ায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রদল কর্মী বলেন, এই আহবায়ক কমিটির মতো কমিটি ছাত্রদলের কলংক ছাড়া আর কিছুই নয়। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের নিজ উপজেলায় এমন হ-য-ব-র-ল কমিটি বিএনপির জন্য বড় লজ্জার বলে মনে করেন কেউ কেউ। কমিটি গঠনের পর থেকে আহবায়ক মুকুট ও যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে মাঠ পর্যায়ে ছাত্র দলের কার্যক্রম অনেকটা চাঙা ছিল। সর্বশেষ বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ নিখোঁজ নিয়ে মুকুট ও আহসান উল্লাহর নেতৃত্বে মিছিল মিটিং সরব ছিল রাজপথ। মধ্যেখানে পুলিশের ভয়ে আহবায়ক মুকুট কোনঠাসা হয়ে পড়লে বিগত সময় সরকারবিরোধী আন্দোলনে যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহ ছাত্রদলের নেতা কর্মীদের নিয়ে মাঠে ময়দানে দেখা গেলও শীর্ষ পদে থাকা নেতারা মাঠে ময়দানে না থাকায় পেকুয়া ছাত্রদলের কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে বর্তমানে।
পেকুয়া উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি এম বাহাদুর শাহ এর কাছে এই বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্র দলের সম্মেলন উপলক্ষে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসব মূখর পরিবেশ বিরাজ করতেছে। তিনি ছাত্রদলের গুরুত্বপূর্ণ পদে ত্যাগি নেতাকর্মীরা স্থান পাবেন বলে ও জানান। পেকুয়া উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক ইকবাল জানান, তৃণমূল থেকে ত্যাগি ছাত্র নেতারা নেতৃত্বে আসবে বলে আমি মনে করি। তবে প্রতিবেদক ছাত্রদলের আহবায়ক যুগ্ম আহবায়কের মধ্যে কোন গ্রুপিং আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রকাশ্যে কোন গ্রপিং নাই, তবে দলের ভিতরে গ্রুপি থাকলে সেটা তাদের ব্যাপার। এই বিষয়ে পেকুয়া উপজেলা যুবদলের সভাপতি ও পেকুয়া উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, তৃর্ণমুলের ত্যাগি নেতারা স্থান পাওয়ার জন্য সম্মেলন করার দিন ধার্য্য করা হয়েছে। তবে গ্রুপি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানামতে কোন গ্রুপিং নাই, তবে সম্মেলনের দিন তারিখ পিছানোর জন্য ছাত্রদলের শীর্ষ স্থানিয় নেতারা চেষ্টা চালাচ্ছেন। এই ব্যাপারে ছাত্রদলের আহবায়ক মুকুট ও যুগ্ম আহবায়ক আহসান উল্লাহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভাব হয়নি। এমনকি অভিযোগ রয়েছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল কয়েকবার পেকুয়ায় এসে গ্রুপিং নিরসনের চেষ্টা চালায় যা তারা পেকুয়া ছাড়ার পর পর আবার  শুরু হয়। তবে পেকুয়ার মতো বিএনপির দূর্গে এমন কমিটি নিয়ে হতাশ জেলা বিএনপি।  তবে নেতাকর্মরা দাবী করছেন তাদের কথা চিন্তা করে কক্সবাজার জেলা ছাত্রদল  ও উপজেলা বিএনপি অতীত মনে রেখে সময় উপযোগী একটি কমিটি ঘোষনা দিবেন।

 

পাঠকের মতামত: