আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন, জাকির নায়েককে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে না। আজ শুক্রবার তিনি এই ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, যতদিন পর্যন্ত জাকির নায়েক আমাদের দেশে কোনও সমস্যা সৃষ্টি করবেন না, ততদিন তাকে ফেরত পাঠানো হবে না। কারণ তাকে মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। খবর পার্সটুডের।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবিশ কুমার বলেছিলেন, আমরা মালয়েশিয়ায় বাস করা ভারতীয় নাগরিক জাকির নায়েককে হস্তান্তর করার জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ওই আবেদন জানানো হয়েছে। এই পর্যায়ে বলা যায়, মালয়েশিয়ার কর্মকর্তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে। কুয়ালালামপুরে আমাদের হাইকমিশনার ক্রমাগত সংশ্লিষ্ট মালয়েশিয়ার কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এরকম মন্তব্যের পরই খোদ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি প্রকাশ্যে আসায় কূটনৈতিক ক্ষেত্রে তা ভারতের জন্য ‘বড় ধাক্কা’ বলে মনে করা হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে ইসলামি বক্তা ডা. জাকির নায়েক দেশে ফিরছেন বলে খবর ছড়ায়। কিন্তু গত বুধবার জাকির নায়েকের আইনজীবী সাহারুদ্দিনের মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জাকির বলেন, আমার দেশে ফেরার খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও ভুয়া। যতদিন না ভারত আমার জন্য সুরক্ষিত বলে মনে করবো ততদিন দেশে ফেরার কোনও সম্ভাবনা নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার গুলশানে হামলাকারী সন্ত্রাসীদের কয়েকজন জাকির নায়েকের প্রচারে প্রভাবিত হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। সেসময় তিনি ওই অভিযোগ নাকচ করে বলেন, আমি শান্তির দূত, কখনও সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করিনি। তিনি সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা করেন এবং ‘ইসলামে সন্ত্রাসের কোনও স্থান নেই’ বলে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে তিনি ‘মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার’ হচ্ছেন বলেও জাকির নায়েক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন। জাকির নায়েক সেই থেকেই বিদেশে আছেন এবং বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন।
২০১৬ সালের নভেম্বরে ভারতের জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) ইউএপিএ ও ফৌজদারি দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকেও সরকার নিষিদ্ধ করে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদে উসকানি দেয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।
এদিকে ভারত ২০১৭ সালে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে ‘রেড কর্নার নোটিশ’ জারির আবেদন জানায়। কিন্তু সেবারও ওই প্রচেষ্টাকে ধাক্কা দিয়ে ইন্টারপোল জানিয়ে দেয়, জাকিরের বিরুদ্ধে ভারত সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার প্রমাণ দিতে পারেনি। ভারত আইনি প্রক্রিয়াও সঠিকভাবে অনুসরণ করেনি বলেও সংস্থাটি জানায়। তাছাড়া ইন্টারপোল কমিশন জাকিরের বিরুদ্ধে করা আবেদনে ‘রাজনৈতিক’ ও ‘ধর্মীয়’ বৈষম্যের গন্ধ পাওয়াসহ এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বার্থও তেমন নেই বলে জানায়।
পাঠকের মতামত: