ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

চোরাই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর মুহূর্তেই বদলে ফেলে তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: মোবাইলের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) পরিবর্তন করা ডিজিটাল প্রতারণা চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১১৭টি চোরাই মোবাইল, আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত তিনটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো- ফেনীর নতুনবাজার এলাকার মো. সেলিমের ছেলে মো. সাজ্জাদ (২০), সাতকানিয়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম হাটিয়া এলাকার কবির আহমেদের ছেলে হাবিবুল্লাহ মেজবাহ (২৫) ও ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুং এলাকার বদিউল আলমের ছেলে মো. রাশেদ (২০)।

বুধবার (৬ এপ্রিল) নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন, সিডিএ মার্কেট, রিয়াজ উদ্দিন বাজারে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ডিসি মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি জানান, প্রথমে চোরাই মোবাইল মোবাইল সংগ্রহ করতো তারা। এরপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দিতে বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে মাত্র কয়েক মিনিটেই মোবাইলের আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) পরিবর্তন করে বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে দিতো। তাছাড়া অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও ব্যবহৃত হয় এসব মোবাইল।

ডিসি জসিম উদ্দিন বলেন, ৫টি চোরাই মেবাইলসহ সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হলে আাইএমইআই বদলে ফেলার ঘটনাটি সামনে উঠে আসে। সিডিএ রয়েল প্লাজার ইনোভেটিভ ফোন কেয়ার নামে একটি মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান থেকে সাজ্জাদ চোরাই মোবাইলগুলো আইএমইআই পরিবর্তন করে আনতো। এই কাজের সাথে দোকানের মালিক হাবিবুল্লাহ মেসবাহ ও রাশেদ সরাসারি জড়িত। মেসবাহ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে চোরাই, ছিনতাই হওয়া মোবাইল সংগ্রহ করতো। পরে এসব মোবাইল বিভিন্ন দোকানে ও গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করা হতো। আসামিদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তারা বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে কয়েক মিনিটে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে ফেলে। যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের লক খুলে তা আবার বিক্রি করে দিতো। এছাড়া আইএমইআই বদলে গেলে ফোনের মালিক ফোন শনাক্ত করতে পারলেও তিনি মালিকানা দাবি করতে পারেন না। কারণ একজন গ্রাহক ব্রান্ডেড শপ থেকে যখন একটি নতুন মোবাইল ফোন কিনে থাকেন সেটিই প্রকৃত আইএমইআই।

সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেটি মুছে কিংবা বদলে ফেলা হলে কাগজে-কলমে মালিকানা দাবি করার সুযোগ থাকে না। মোবাইল ফোন চুরি, ছিনতাই, হারিয়ে গেলে অথবা ফোন দিয়ে অপরাধ করলে দ্রুত অপরাধীকে শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোবাইলের আইএমইআই ট্র্যাক করে অপরাধীর অবস্থান জানতে পারে। কিন্তু অরিজিন্যাল আইএমইআই বদলে ফেললে সে মোবাইল এবং অপরাধীকে কোনভাবেই শনাক্ত করা যায় না। যার ফলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।

পাঠকের মতামত: