ঢাকা,সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চীনা কাঁচামালে তৈরি ৬ কোম্পানির ওষুধ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’

ডেস্ক নিউজ :  চীন থেকে আমদানিকৃত কাঁচামালে ‘ভালসারটান’ উৎপাদিত ২৩ প্রকারের ওষুধ প্রত্যাহারে দেশীয় ছয় ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির প্রতি নির্দেশনা জারি করেছে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।

কোম্পানিগুলো হলো- মেসার্স ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মেসার্স পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মেসার্স দি একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, মেসার্স ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, মেসার্স রেনাটা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড ও মেসার্স হেলথকেয়ার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।

১৪ অক্টোবর ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) রুহুল আমিন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

চিঠিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ওষুধগুলো কোনো ফার্মেসিতে পাওয়া গেলে তা সিলগালা করে পরিমাণ উল্লেখসহ সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান/নিকটস্থ ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেল/প্রতিনিধিকে ফার্মেসি থেকে তা সংগ্রহের নির্দেশ প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কে রুহুল আমিন বলেন, ‘চীনের জোহাই রোনদো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ভালসারটান নামক সক্রিয় কাঁচামালে ইমপিউরিটি হিসেবে সম্ভাব্য কার্সিনোজেনিক এজেন্ট এনডিএমএ (এন-নাইট্রোসোডিমেথিলামাইন) শনাক্ত হওয়ায় ওই কাঁচামালে উৎপাদিত ওষুধ বাজার হতে এএমএ, ইউএসএফডিএসহ ২৩টি দেশ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়। এ কারণে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরও একই কাঁচামালে উৎপাদিত ওষুধ বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেয়।’

বাজার থেকে যে কোম্পানির যে ওষুধ প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে-
ইনসেপটা কোম্পানির উৎপাদিত আমলোসারটিন (৫/৮০ ট্যাবলেট) নামক ওষুধটির বিভিন্ন ব্যাচের ১৮০৬২ থেকে ১৮০৭৫ ওষুধ প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দি একমি কোম্পানি উৎপাদিত সব ব্যাচের ভালটিন ৮০ এমজি ট্যাবলেট, ভালটিন ১৬০ এমজি ট্যাবলেট, কো-ভালটিন ৫/৮০ এমজি ট্যাবলেট, কো-ভালটিন ৫/১৬০ এমজি ট্যাবলেট।

পপুলারের বিভিন্ন ব্যাচে উৎপাদিত এমলোভাস ভিএস ৫/৮০ ট্যাবলেট, এমলোভাস ভিএস ৫/১৬০ ট্যাবলেট, এমলোভাস ভিএস ১০/১৬০ ট্যাবলেট, ভালভাস এইচসিটি ১০/১৬০/২৫ ট্যাবলেট।

ড্রাগ ইন্টারন্যাশনালের বিভিন্ন ব্যাচে উৎপাদিত এভি-৫ ট্যাবলেট, এভি-১০ ট্যাবলেট, এভি-৫/৮০ ট্যাবলেট, কার্ডিভাল ৮০ ট্যাবলেট।

রেনেটা কোম্পানির ভালডিপিন এফসি ৮০ এমজি ও ১৬০ এমজি ট্যাবলেট, ভালজিডি এফসি (১৬০ গ্রাম+১২ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট), ভালজিডি এফ সি (৮০ গ্রাম+ ১২ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট)।

এ ছাড়া হেলথ কেয়ারের ডিসিস ৮০ মিলিগ্রাম (এফসি) ট্যাবলেট, ডিসিস ১৬০ মিলিগ্রাম (এফসি) ট্যাবলেট ও ডিসিস প্লাস ৮০/১২ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম (এফসি) ট্যাবলেট প্রত্যাহারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ রক্তচাপ রোগ নিরাময়ে বহুল ব্যবহৃত এসব ওষুধে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে বলে ইতোমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অপর এক সূত্র জানায়, ইতিপূর্বে চীনের অন্য একটি জিজিয়াং হোয়াহাই ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদিত কাঁচামালে তৈরি দেশীয় স্কয়ারের (কেমোভাল ৫/৮০ ও ৫/১৬০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট), পপুলার (এমলোভাস ভিএস ৫/১৬০, ১০/১৬০, ৫/৮০ ও ভালভাস ৫/১৬০, ১০/১৬০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট ও কনকর্ড (ভালোসান ৮০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট) এসব ওষুধ প্রত্যাহার ও ধ্বংস করা হয়।

গত ৪ আগস্ট ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।

পাঠকের মতামত: