নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কাল ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার অনুষ্টিত হচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে প্রথমভাবের মতো ইভিএমের মাধ্যমে ভোট অনুষ্টিত হবে। নির্বাচনকে ঘিরে আতংক বিরাজ করছে ভোটারদের মাঝে। তবে, নির্বাচন সুুষ্ট ও শান্তিপূর্ণভাবে করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। নির্বাচনে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য তিনস্তরের নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করা হবে।
প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন অনুষ্টিত হবে। এসব ভোট কেন্দ্রেগুলোর সবগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে বিপুল সংখ্যক র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ১২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভার নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, প্রথমভারের মতো ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ হচ্ছে চকরিয়া পৌরসভার। এই পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ডে ১৮টি কেন্দ্র রয়েছে। ১৮টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। ভোট গ্রহণের দিন ১২ জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি, র্যাবের ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্স, পুলিশের দুটি মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্স মাঠে কাজ করবে। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে কেউ গন্ডগোল করলে ছাড় পাবে না। ভোটাররা যাতে নির্বিগ্নে ভোট প্রদান করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত: করোনা মহামারির কারণে দুই দফা স্থগিত হয় চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচন। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল প্রথম পৌরসভা নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশন। তবে করোনা মহামারির কারণে প্রথম দফার নির্বাচন স্থগিত করে ২১জুন দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়। পরে করোনা মহামারির কারণে সেটিও স্থগিত হয়ে যায়। সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করা হয়।
চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনে চার মেয়র এবং মহিলা ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী অংশ গ্রহণ করছেন। কাল ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্টিতব্য নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দি চারপ্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী (নৌকা), নাগরিক কমিটি মনোনীত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর জিয়াবুল হক (নারিকেল গাছ)। তবে জাতীয় পাটি (এরশাদ) মনোনীত প্রার্থী জাতীয় পাটির কেন্দ্রীয় নেতা মনোয়ার আলম (লাঙ্গল) বর্তমানে নির্বাচনী মাঠে নেই। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা এডভোকেট ফয়সাল সিদ্দিকী (কম্পিউটার) শুক্রবার ১৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁিড়য়েছেন।
১১ এপ্রিল চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনী তফসিল ঘোষনার পর মেয়র পদে বিএনপি থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন সাবেক পৌর মেয়র ও চকরিয়া পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আলহাজ নুরুল ইসলাম হায়দার। পরে অবশ্য তিনি বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে মনোনয়ন ফরম জমা দেননি। ফলে এ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় কোন মেয়র প্রার্থী ভোটের মাঠে নেই।
সেই হিসেবে এবারের নির্বাচনে ভোটের লড়াই হবে মুলত আওয়ামী লীগ দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর চৌধুরী বনাম স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী জিয়াবুল হকের সাথে। অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে মোট ৪৮ হাজার ৭’শ ২৪জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮’শ ৯৯ জন পুরুষ এবং ২২ হাজার ৮’শ ২৫জন মহিলা ভোটার ভোটাধীকার প্রয়োগ করবেন।
পাঠকের মতামত: