ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়া জমজম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা নিয়ে দু’পক্ষ মুখোমুখি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া : 
চকরিয়ায় প্রাইভেট ক্লিনিক জমজম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির এমডি জামায়াত নেতা গোলাম কবিরকে শিবির ও জামাতকে পৃষ্ট পোষকতার অভিযোগে দায়ীত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত বর্তমান এমডি গোলাম কবিরকে সরিয়ে নতুন এমডি হিসেবে ডা: শওকত ওসমানকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে জানা গেছে। নতুন এমডিকে দায়ীত্ব বুঝিয়ে না দেয়ায় ওই হাসপাতালে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তার অনিয়ম দূর্নীতির ও স্বেচ্ছাসারিতার কারণে গত ১৪ আগষ্ট জমজম হাসপাতাল (প্রাঃ) লি: বোর্ড অব ডিরেক্টরস এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডাঃ মাহবুব কামাল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় পরিচালকগণের সিদ্ধান্তক্রমে গোলাম কবিরকে এমডির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নাক কান গলা বিশেজ্ঞ চিকিৎসক ডা: শওকত ওসমানকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওইদিন নতুন এমডি দায়িত্ব নিতে জমজম হাসপাতালে গেলে গোলাম কবির ও তার অনুসারিরা ডা: শওকত ওসমানকে চরমভাবে নাজেহাল করে তাড়িয়ে দেন। হাসপাতালের এক পরিচালক জানান, গোলাম কবির এমডির পদটি ধরে রাখতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে জামায়াত-শিবিরের চিহিৃত ক্যাডার ও দাগী আসামীদের হাসপাতালে এনে জমায়েত করে রেখেছেন। হাসপাতালটি তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করছেন। তিনি সেখানে বসে নিজের ঠিকাদারী, ফিশিং বোট, চিংড়ি ও লবণের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তিনি বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে নাশকতা ও সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছেন। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে নাশকতা ও পুলিশ অ্যাসল্ট সহ ৪টি মামলা রয়েছে কক্সবাজার থানায়।
জমজম হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের কয়েকজন পরিচালক জানান, জামাত শিবিরকে পৃষ্ট পোষকতা ছাড়াও জমজম হাসপাতালের অবৈধ ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কবিরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এমন কী স্বেচ্ছাচারিতা, একগুয়েমি, রোগীর স্বজনদের সাথে অসাদাচরণের গুরুতর অভিযোগও উঠেছে। এতে করে হাসপাতালের পরিবেশ ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়ে পড়েছে। জমজম হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক এমডি আক্তার আহমদকে জোরপূর্বক সরিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের শিবির ক্যাডার ও ’৯৩ সালের ৪ ডিসেম্বর তারিখে তৎকালিন চকরিয়া ইউএনও  মোস্তাফা কামাল ’র ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত গোলাম কবির দায়িত্ব নেন দুই বছর পূর্বে। তিনি এমডির দায়িত্ব নিয়ে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেন। হাসপাতাল একটি সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হলেও গোলাম কবির এটিকে গলাকাটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করে। রোগীদের কাছ থেকে অবৈধ পন্থায় নিয়ম বর্হিভূতভাবে টাকা আদায় তার স্বভাবে পরিণত হয়। এমন কী মৃত রোগীদের কাছ থেকেও টাকা আদায় করে থাকেন তিনি। হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে খারাপ ও অশালিন আচরণ নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়। তার দুর্ব্যবহারের কারণে এই হাসপাতালের শিশু বিশেজ্ঞ ডা: আফরোজ হক চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যান। জমজম হাসপাতালের এক পরিচালক জানান; জিএম সাইফুললাহ নাম ধারণ করে ’৯৩ সালে চকরিয়ার টিএনও’র ওপর হামলাকারী গোলাম কবির মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যান। তিনি হাসপাতালটি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে শুরু হয় নানা অঘটন। এ ব্যাপারে গোলাম কবির জানান, আমাকে সরাতে হলে আগে শোকজ করতে হবে। কিন্তু কী কারণে আমাকে এমডির পদ থেকে সরাবেন। কিছু কুচক্রী পরিচালক আমাকে দায়িত্ব থেকে সরানোর চষ্টা করছেন। নতুন এমডির দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ডা: শওকত ওসমান একজন পরিচালক হিসাবে হাসপাতালে আসতে পারেন। তাকে নাজেহাল করা হয়নি। তিনি পরিদর্শন করে চলে গেছেন। নতুন এমডি ডা: শওকত ওসমানের সাথে যোগাযোগ করেও তিনি আধ ঘন্টা পরে কথা বলবেন বলে কেটে দেন।

পাঠকের মতামত: