ঢাকা,মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় প্রয়াত সাংবাদিক ছিদ্দিকের পরিবারের ১একর জমি দখলে নিতে চায় ভুমিদস্যুরা!

মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুযা
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার প্রয়াত সাংবাদিক এবিএম ছিদ্দিক এর অসহায় পরিবারের ১ একর জায়গা জবর দখলের জন্য স্থানীয় হারবাং ও লোহাগাড়ার কিছু ভুমিদস্যু অপতৎপরতা চালাচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। প্রয়াত সাংবাদিক পরিবারের জমি দখলে নিতে বিভিন্ন আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে সাংবাদিক পরিবারকে লাগামহীন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে। ভূমিদস্যুদের দখলবাজি থেকে রেহাই পেতে প্রয়াত সাংবাদিকের অসহায় পরিবার স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিক নেতাদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের বৃন্দাবনখীল গ্রামের মৃত আলতাফ হোসেনে এর পুত্র ও পেকুয়া উপকূলীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি প্রয়াত এবিএম ছিদ্দিকের বাড়ীর অদূরে বিএস খতিয়ান ২৮০ এর আন্দরে ১একর জমি রয়েছে। উক্ত জমি বিগত ০৮/০৮/১৯৫৬ইংরেজী তারিখে ১৫৮নং দলিলমূলে সাংবাদিক ছিদ্দিক ক্রয় করেছিলেন। জমি ক্রয় করার পর থেকে সাংবাদিক এবিএম ছিদ্দিকের পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে করে আসছেন। কিন্তু বিগত ০৮/০৮/২০১৫ইংরেজী তারিখে সাংবাদিক এবিএম ছিদ্দিক দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে চকরিয়ার হারাবাংস্থ নিজ বাড়িতে মারা যান। সাংবাদিক ছিদ্দিক মারা যাওয়ার পূর্বে জাতীয় দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার চকরিয়া ও পেকুয়া প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং পেকুয়া উপকূলীয় প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে অধুনালুপ্ত দৈনিক মিল্লাত পত্রিকায় চকরিয়া প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেছেন।
সাংবাদিক এবিএম ছিদ্দিকের স্ত্রী হাছিনা খানম অভিযোগ করেছেন, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার জমিদার পাড়া গ্রামের মৃত সিদ্দিক আহমদ এর পুত্র আবদুল গফুর ও তার লালিত-পালিত দখলবাজ হারবাং ইউনিয়নের করমুহুরী পাড়া গ্রামের কালা মিয়ার পুত্র শাহ আলম, আবদুল হামিদের দুই পুত্র কালা মনু ও আনোয়ার কবির ১একর জমি জবর দখলের জন্য চেষ্টা করছে এবং বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা দিয়ে অব্যাহতভাবে হয়রানী করছে। ভূমিদস্যু গং বিগত ২৮/০৩/২০২২ ইংরেজী তারিখে কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি এমআর মামলা করে তা চকরিয়ার এসিল্যান্ডের মাধ্যমে হারবাং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে তদন্তে নিয়ে এসে তহশিলদারকে ম্যানেজ করে একটি মিথ্যা প্রতিবেদনও নিয়ে নেন। সাংবাদিক এবিএম ছিদ্দিকের স্ত্রী আরো বলেন, ভূমিদস্যুদের কাছে আমার পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছি। আমি প্রশাসন ও সাংবাদিক নেতাদের কাছে হস্তক্ষেপ চাই। গত ২০১৯ ইংরেজীতে আমার বড় ছেলে মারুফের পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরী হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস চট্টগ্রাম সিএমপিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ছুটি নিয়ে বাড়ী আসার পথিমধ্যে গত ২০২২ ইংরেজীর ১৭ জুন রাত ৮ টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি বাজারে হানিফ বাসের চাপায় আমার ছেলে মারুফ মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। কয়েক বছরের ব্যবধানে স্বামী ও বড় ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকে আমরা অসহায় হয়ে পড়েছি। এই সুযোগে আমার স্বামীর রেখে যাওয়া দালিলিক ১ একর সম্পত্তি ভূমিদস্যুরা জবর দখল করতে চায়। এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা। দখলবাজরা খুবই প্রভাবশালী। ওরা প্রতিনিয়তই আমাদের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলে জায়গা জবর দখলের হুংকার দিচ্ছে।
প্রয়াত সাংবাদিক পরিবারের জমি দখলের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে চকরিয়ার হারবাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দিন বলেন, আমি পরিষদ থেকে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে সীমানা চিহ্নিত করার পর মরহুম সাংবাদিক ছিদ্দিকের পরিবারকে জায়গা পরিমাপ করে দিয়েছিলাম। এরপরও সাংবাদিক পরিবারের জমি কেউ দখল চেষ্টা করলে তিনি পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, যে কোন সময় সাংবাদিক পরিবার থানায় এসে আইনগত সহায়তা চাইলে সহায়তা করা হবে।

পাঠকের মতামত: