নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
আফরোজা জান্নাত (আফিয়া), চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের আবদুল মজিদের ৬ কন্যার মধ্যে সবার বড় ।
তিনি কাকারা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আফরোজার পিতা আবদুল মজিদ প্রায় ৩বছর পূর্বে প্রবাসে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে দেশে ফিরে এসে ধারকর্জ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতো। কিন্তু ভাগ্য তার পক্ষে না থাকায় প্রতি মৌসুম ও একটানা দুই-তিন বছর সবজি চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ।
সবজি চাষের ঋণের বোঝা নিয়ে ফের এনজিও থেকে লোন নিয়ে বিদেশে গমনের জন্য চেষ্টা চালায় । কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, সেখানেও দালাল ও প্রতারকের খপ্পরে পড়ে মোটা অংকের টাকা হারিয়ে বিদেশে যাওয়া হয়নি ।
সবশেষ তৃতীয়বার সামান্য ঘরভিটা ছিল, সেটা বিক্রি ও এনজিও থেকে লোন নিয়ে পাঁচ-ছয়মাস পূর্বে দশ-পনেরো লাখ টাকার বিশাল ঋণের বোঝা নিয়ে সৌদি আরব চলে যায়।
আফরোজা জান্নাত,তার পিতার এই খারাপ সময়ে খেয়ে না খেয়ে পড়া-লেখা চালিয়ে গেছে,এবং সময়মত বই-পুস্তক খাতা-কলম পায়নি । এমনকি এসএসসির চুড়ান্ত পরীক্ষার সময়তেও সবটুকু বই ক্রয় করতে পারেনি, পরীক্ষার পূর্বে অন্যজনের কাছ থেকে বই ধার নিয়ে কোনোরকম পরীক্ষা দিয়েছে।
নিয়মিত কোচিং করার সুযোগও হয়নি তার। গত ২৮শে জুলাই প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সকল বিষয়ে এ প্লাস নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়েছে।
আফরোজা বলেন, আমার স্বপ্ন ভালো মানের ডাক্তার হয়ে জনগণের সেবা করা, তার জন্য আত্মীয়-স্বজনসহ দেশবাসীর দোয়া কামনা করছি ।
আফরোজা জান্নাতের মাতা জাহেদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে ভালো মেধাবী সেটা জানি । কিন্তু মেয়ে পরিবারে আর্থিক যে খারাপ পরিস্থিতির সময় থেকে পরীক্ষা দিয়েছে সেই হিসেবে অকল্পনীয় ফলাফল করছে। তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ও স্কুলের সকল শিক্ষককে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানাই।
পাঠকের মতামত: