ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

চকরিয়ার ৬ ইউপিতে জমজমাট লড়াই

yyyyy-768x442সানজিদা আকতার রুনা, চকরিয়া :
মাঝখানে আর মাত্র ১ দিন বাকি, ৭ই মে শনিবার ইউনিয়ন পরিষদের চতুর্থ ধাপের নির্বাচনকে সামনে রেখে চকরিয়ার উপকূলীয় ৬ ইউনিয়নে শেষ মুহুর্তের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদের প্রার্থীরা। উপজেলার মাতামুহুরী উপকূলীয় এলাকার ৬ ইউপির মধ্যে বদরখালী, পশ্চিম ও পূর্ব বড় ভেওলা ভোটের মাঠে স্বতন্ত্র হেভিওয়েট চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে শেষ মুহুর্তে জমজমাট প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। শেষ মুহুর্তে এসে স্বতন্ত্র চশমা প্রর্তীকের প্রার্থী আ.ন.ম হেফাজ সিকদারের বিশাল ভোট ব্যাংকের দুর্গ হিসাবে পরিচিত তার নিজ এলাকা ৪, ৫,৬ ও ৯ নং ওয়ার্ডের বাজার পাড়া, খালকাচাঁ পাড়া, আমির খালী পাড়াও আজম নগর পাড়ার অক্ষত থাকা ভোট ব্যাংক চিনিয়ে আনতে ভোটারদের কাছে আনারস মাকার্র চেয়ারম্যান প্রার্থী খাইরুল বশর ও মোটর সাইকেল মার্কার প্রার্থী মোঃ আলী ভোট জন্য  হানা দিয়েও বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূলের ভোটাররা। তবে এখনোও তার এলাকায় বিশাল ভোট ব্যাংক ধরে রেখে ভোটের রাজনীতিতে জনপ্রিয়তায় মো: আলী এগিয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বদরখালীর সচেতন ভোটারেরা । তবে অন্য ৪ প্রার্থীদের উড়িয়ে দিলে হবে না।
এদিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচারণা ততই জমজমাট হয়ে উঠছে। নির্বাচনকে ঘিরে প্রত্যেক ইউনিয়নের হাট বাজার ও ছোট বড় চা বিস্কুটের দোকানে এবং হোটেল রেস্তেঁরায় ভোটাররা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমলোচনা করছেন। বিশেষ করে আ.লীগের বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীরা গোপনে ভোট প্রার্থনায় মেটে উঠেছেন। ফলে আ.লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা জয়ী হতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বনে ব্যস্ত।
অপরদিকে ছয় ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩১ ও সংরক্ষিত এবং সাধারণ ওয়ার্ডের সদস্য পদে ২৫৮জন প্রার্থী নানা ফুলঝুঁিড় ছড়িয়ে সাধারণ ভোটারদের মন জয় করতে প্রাণপ্রণ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভোর সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ইউনিয়নের গ্রামে গ্রামে অলিগলিতে ভোট চেয়ে ধর্ণা দিচ্ছে ভোটারদের কাছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতকারী নতুন প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কাজ করার নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তবে বিদ্রাহী প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে এলাকায় যতেষ্ট উন্নয়ন কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। জনগনও তাদের কথা মনোযোগ সহকারে শুনছেন।
গতকাল সরজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বদরখালীতে আ.লীগ বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীরা উৎসব মূখর পরিবেশে প্রচারনা চালাচ্ছেন। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী প্রচারণাও সরগরম হচ্ছে নির্বাচনী মাঠ। প্রার্থীরা জয় হওয়ার জন্য প্রাণ প্রণে ছুটে যাচ্ছে ভোটারদের দ্ধারে দ্ধারে। বিশেষ করে চেয়ারম্যান পদ নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। তবে এ নির্বাচন আদৌও শান্তিপূর্ণ হবে কিনা ভোটাররা সন্দেহ প্রকাশ করে সবর্ত্র বিরাজ করছে অজানা শংকা। এ নির্বাচন সুষ্ট ও সুন্দর ভাবে পরিচালনা ও আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: সাখাওয়াত হোসেন।
উপজেলার বদরখালীতে আ.লীগের প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরে হোছাইন আরিফ (নৌকা)। তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতা মোঃ আলী (মোটর সাইকেল), মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক আ.ন.ম হেফাজ সিকদার (চশমা), আওয়ামীলীগ নেতা খাইরুল বশর মেম্বার (আনারস)। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরে হোছাইন আরিফ পূনরায় চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য জয়ের লক্ষে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুমূল প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। এখানে বিএনপির মনোনিত ধানের শীষের একক প্রার্থী হয়েছেন আহসানুল কাদের চৌধুরী সাব্বির। তবে, পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রবীণ রাজনৈতিকবিদ মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা (নৌকা)। বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন মাতামুহুরী সাংগঠনিক থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেফাজতুর রহমান চৌধুরী টিপু মিয়া (ধানের শীষ)। এখানে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন ( আনারস) প্রতীক। তবে এখানে বিএনপি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চেয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের প্রচারণায় তৃণমূলে বিশাল ভোট ব্যাংক সৃষ্টি হয়েছে। এখানে জামায়াতের কোন প্রার্থী না থাকায় দলীয় প্রতীক বিবেচ্য না করে সাহাব উদ্দিনের আনারস প্রর্তীকের ভোট ব্যাংকে পড়বে উল্লোখ যোগ্য ভোট। এখানে সাহাব উদ্দিন এলাকার উল্লোখ্যযোগ্য উন্নয়ন করায় এ ইউনিয়নে আবার মসনদে বসবেন বলে ভোটারদের মাঝে আওয়াজ উঠেছে। পূর্ব বড় ভেওলায় আওয়ালীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন সাবেক বিএনপি নেতা  খলিল উল্লাহ চৌধুরী। বিএনপির ধানের শীষ প্রার্থী হয়েছেন মাতামুহুরী বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল আরিফ দুলাল। আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন আ.লীগ নেতা নাছির উদ্দিন নোবেল। এখানে প্রচারনায় তৃণমুলে বিদ্রোহী প্রার্থীকে ছাড়িয়ে গেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী খলিল উল্লাহ চৌধুরী। তবে এখানে আ.লীগ বিএনপির দুইজনই হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় মূল লড়াই হবে নৌকা ও ধানের শীষ প্রার্থীর সাথে। দেখা যাক কে হবেন ইউনিয়নের অভিবাবক সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে শনিবার রাত ৯ টা পর্যন্ত। তবে সচেতন ভােটাররা জানিয়েছেন, নৌকার প্রার্থী খলিল উল্লার চাইতে বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী আনোয়ারুল আরিফ দুলাল অনেক বেশী এগিয়ে আছে দাবী করেছে।

পাঠকের মতামত: