ছবির ক্যাপশন: গত শনিবার বিকালে ধানসিড়িতে আয়োজিত গোলাম কবির গংয়ের সংবাদ সম্মেলনের দৃশ্য
নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ::
চকরিয়ার জমজম হাসপাতালটি এখন ধুঁকছে ব্যবস্থাপনার বিরোধে। জামায়াতি হাসপাতাল হিসেবে পরিচিতি পেলেও এখানে স্বাস্থ্যসেবা ছিল উন্নত। বর্তমানে তিন গ্রুপে বিরোধে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গত দুই দিনে সংবাদ সম্মেলন করে দুটি পক্ষ অবস্থান ব্যাখ্যা করেছে এবং এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে আনীত দূর্নীতির যাবতীয় প্রমানপত্র উপস্থাপন করেছে। ত্রি-মুখী সংঘর্ষের আশংকায় প্রশাসন ও পুলিশ সতর্ক নজরদারি করছে হাসপাতাল ঘিরে। এদিকে আগে থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়েছে চরম বেকায়দায়।
চকরিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান বলেন, ‘জমজম হাসপাতালটি নিয়ে নানা বিতর্ক চলে আসছে। শুক্রবার এক গ্রুপ পরিচালনা পর্ষদের সভা আয়োজন করতে চাইলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় তা বন্ধ করে দিয়েছি।’
চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাসপাতালটি নিয়ে জামায়াতিদের রশি টানাটানিতে পুলিশকে রীতিমতো টেনশনে থাকতে হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, চকরিয়ায় ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জমজম হাসপাতাল। জামায়াতের সাবেক সংসদ সদস্য এনামুল হক মঞ্জু দলীয় লোকজন ছাড়াও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সঙ্গে নেন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক মাহবুব কামাল চৌধুরীকে চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট চিকিত্সক ডা. শওকত ওসমানকে ভাইস চেয়ারম্যান করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়।
২০১৬ সালে গোলাম কবির নামের একজন জামায়াত সমর্থিত ক্যাডার হাসপাতালটির এমডির দায়িত্ব দিলে অব্যবস্থাপনার চূড়ান্ত হয়। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হলে তা মানেননি। মামলা দায়েরের মাধ্যমে তৈরি করেছে ব্যাপক জটিলতা। গায়ের জোরে মানছেনা আদালতের রায়।
গোলাম কবির গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, ‘চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগড়া উপজেলার একটি হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে বসে শুক্রবার পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক হয়েছে। আমি বর্তমানে হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)। আমি কোনো অন্যায় কাজে নেই। আমার প্রতিপক্ষ হাসপাতালের অন্যায় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে না পেরে আবোলতাবোল কথা বলছেন।’
দৈনিক নয়া দিগন্তের সাংবাদিক ও শেয়ারহোল্ডার জি এম আশেক উল্লাহ একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এ রকম বিতর্কিত সভার সিদ্ধান্ত মানি না। গোলাম কবিরকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকেই যত সব সমস্যা লেগেই রয়েছে।’
প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি অধ্যাপক ডা. মাহবুব কামাল চৌধুরী বলেন, ‘জীবনে রাজনীতি করিনি। নিজ এলাকায় চিকিত্সাসেবা কেন্দ্র গড়ার কাজে সাড়া দিয়ে এখন বিপদগ্রস্ত। প্রতিষ্ঠানটি এখন দলীয় ক্যাডার হিসেবে পরিচিতদের হাতে জিম্মি।’
পাঠকের মতামত: