ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

গ্রেনেড হামলার দায় বিএনপি’র হলে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগের: ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক ::  একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলার দায় যদি তৎকালীন বিএনপি সরকারকে নিতে হয়, তাহলে পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকাকালে সংঘটিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায়িত্ব যদি রাষ্ট্রযন্ত্রের হয় তাহলে বর্তমান সরকারের শাসনামলে পিলখানা বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, হলি আর্টিজানে হত্যাকাণ্ড এবং জঙ্গি হামলায় নিহত বিদেশী কূটনীতিক, ব্যবসায়ী, এনজিও কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ইমাম-মোয়াজ্জিন, যাজক, পুরোহিত, ব্লগারসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষের হত্যাকান্ডের দায় ক্ষমতাসীনদের ওপরই বর্তায়। কিন্তু রায়ের পর্যবেক্ষণে এসব বিষয়ে কোন উল্লেখ নেই। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, রায়ের পর্যবেক্ষণে কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে গত ১০ বছরে হাজারো গুম, খুন, গায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করে পঙ্গু করা, হাজার হাজার গায়েবী মামলা দিয়ে লাখ লাখ বিএনপি নেতাকর্মীদের বছরের পর বছর ঘরছাড়া করে রাখা, গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করার বিষয়ে কোন কথা না থাকা রায়কে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই পারে। এ রায়ের ওপর ভিত্তি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পদত্যাগ করার প্রশ্নই আসেনা বলে মন্তব্য করেন মির্জা আলমগীর।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দলীয় তদন্তকারীর চক্রান্তে সাজানো মামলায় তারেক রহমানকে সাজা দেয়া হয়েছে। এটা জানার পরেও কেউ কেউ দল থেকে তার পদত্যাগের যে পরামর্শ দিয়েছেন- তাদের কাছে জনগণ প্রশ্ন করতে পারে যে, এত শত গুম, খুন করার জন্য দায়ী সরকারের পদত্যাগ কি তারা দাবী করেছেন? নিম্ন আদালতের দেয়া রায়কে যখন আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন ও বিএনপি-কে দুর্বল করার অসৎ উদ্দেশ্য বলছি, তখন সেই রায়ের ভিত্তিতে আমাদের নেতা তারেক রহমানের পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না। মির্জা ফখরুল আরও বলেন, আদালতের রায়ে বিরোধী দলের প্রতি সরকার ও সরকারী দলের প্রত্যাশিত আচরণ সম্পর্কে যেসব বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে-তা বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকারী দলের আচরণের ঠিক বিপরীত। আমরা আশা করবো সরকার আদালতের এসব পর্যবেক্ষণ মান্য করবে। তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি সরকারী দলের আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ- সে সম্পর্কে বিচারকের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে সাবেক মন্ত্রী ও এমপি এস এম এ কিবরিয়া ও আহসান উল্লাহ মাস্টারের হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ থাকলেও বর্তমান সরকারের আমলে সাবেক মন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমেদ, এম ইলিয়াস আলী ও সাইফুল ইসলাম হিরু, কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, ছাত্রনেতা জাকিরসহ গুম হওয়া রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কোন কথা নেই।
কেন নেই জনগণ তা জানতে চাইতেই পারে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভুইয়া, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, দপ্তর সহ সম্পাদক মুনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সুত্র: মানবজমিন

পাঠকের মতামত: