অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে উপকূলজুড়ে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুক্রবার রাত ৩টা পর্যন্ত মাত্র দেড়ঘণ্টায় পটুয়াখালীতে ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অতিবৃষ্টি রোয়ানুকে দুর্বল করে দিতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা। এদিকে পায়রা বন্দরের কাছাকাছি অবস্থান করা ঘূর্ণিঝড়টির বর্তমান গতিবিধি দেখে ধারণা করা হচ্ছে এটি সকাল ১১টার দিকে পায়রা বন্দর এলাকা ত্যাগ করে মিয়ানমার ও ভারতের আসাম অভিমুখে যাত্রা করতে পারে।
কলাপাড়া রাডার স্টেশনের কর্মকর্তা প্রকৌশলী প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ব্যাপ্তি ছিল দুটি বাংলাদেশের সমান আকৃতির। সাগরের উপরি ও নিম্নভাগে অবস্থান নেয় রোয়ানু। অতিবৃষ্টিই রোয়ানুকে দুর্বল করবে এবং মানুষের জানমালের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা জানান, রোয়ানুর কিছু অংশ এখনও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে দুর্বল হয়ে অবস্থান করছে। যে কারণে হালকা দমকা হাওয়া ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। তিনি জানান, আজ শনিবার সকাল ১১টার দিকে পায়রা সমুদ্রবন্দর এলাকা ত্যাগ করে রোয়ানু মিয়ানমার ও ভারতের আসামের দিকে রওনা হতে পারে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলসহ জেলার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া না গেলেও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অন্তত দুই শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এর মধ্যে অন্তত শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ। সকাল থেকেই ওই এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে কুয়াকাটা-সোনারচরসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের বড় বড় ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ছে। মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, রোয়ানুর প্রভাবে রাঙ্গাবালী, দশমিনা ও গলাচিপার বিচ্ছিন্ন কয়েকটি বেড়িবাঁধবিহীন চরে বেশকিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব চরে উচ্চ জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী জানান, বৃষ্টি ও উচ্চ জেয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে কি পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের তালিকা পাঠাতে বলেছি।
- – কালেরকন্ঠ
পাঠকের মতামত: