প্রেস বিজ্ঞপ্তি :: কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গত (১২ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার সম্পন্ন হয়েছে ডাচ বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো আঞ্চলিক গণিত উৎসব। উৎসবে কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার ৩০টির বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্টানের মেধাবী শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
সকাল সাড়ে নয়টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উৎসবের প্রধান অতিথি ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক গণিত উৎসবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের গণিত চর্চার বিকাশ ঘটবে, মেধার বিকাশ ঘটবে। ভবিষ্যতে তারা এই গণিত চর্চা, যুক্তি, বুদ্ধি ও চিন্তার মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ গড়বে।’
উৎসবে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন কক্সবাজার উত্তরণ মডেল কলেজের অধ্যক্ষ এ কে ফজলুল করিম চৌধুরী ও আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন। বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল, কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদা মোর্শেদা আইভি, কক্সবাজার মডেল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. রমজান আলী।
স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলো কক্সবাজারের আঞ্চলিক অফিস প্রধান আব্দুল কুদ্দুস রানা। সঞ্চালনায় ছিলেন কক্সবাজার বন্ধুসভার সভাপতি উম্মে সাদিয়া হোসেন সিকদার।
এরপর চারটি ক্যাটাগরিতে (প্রাইমারি, জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও হায়ার সেকেন্ডারি) ভাগ হয়ে পরীক্ষা দেয় শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ নাম্বার প্রাপ্ত ২৫ জনকে ঢাকার জাতীয় গণিত উৎসবের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহম্মদ জাফর ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক নারায়ন দেব, কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম খান।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, একজন মানুষের গড় আয়ু এখন ৭৪ বছর। এই আয়ু দিয়েই জীবনকে উপভোগ করতে হবে। জীবন উপভোগের সবচেয়ে সোজা রাস্তা অন্য মানুষের জন্য কিছু করা। নিজের জন্য কাজ করে যে আনন্দ হয় তা খাঁটি নয়। অন্যের জন্য করলে আনন্দ হয়। ২০০০ সালে সব বিজ্ঞানী একসাথে বসে চিন্তা করল নতুন মিলেনিয়ামের সম্পদ কী। সবার উত্তর হলো জ্ঞান। জ্ঞান আহরণ করতে হবে। পড়তে হবে, শিখতে হবে।
মুনির হাসান বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে আমাদের অর্জন কী। আমরা ফুটবলে ১৯২ তম দল। ক্রিকেটে আজকাল ভালো করি না। ভালো করছি শুধু গণিতে। ২০০৫ সাল থেকে আমরা একমাত্র আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে শতাধিক দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে স্বর্ণপদক পেয়েছি। এখন আমাদের ছেলেমেয়েরা পৃথিবীর বড় বড় বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ে, দেশে-বিদেশে কাজ করে।
সংস্কৃতিক পর্বে গণিতের গান পরিবেশন করে বন্ধুসভার সদস্যরা। বন্ধুসভার সদস্য অজুফা ইয়াছমিন উর্মি নৃত্য, কক্সবাজার মডেল হাইস্কুলের ছাত্র আফ্রিদ কুদ্দুস ছোট্টর ডান্স, চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অর্নিলা দেবদাসের নৃত্য, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র দীপ আদিত্য , বন্ধুসভার দুই সদস্য মোহাম্মদ সিদ্দিক ও পায়েল সেনের গান সবাইকে মাতিয়ে রাখে। সাংস্কৃতিক পর্ব সঞ্চালনা করেন কক্সবাজার সিটি কলেজ বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম।
এরপর কক্সবাজার আঞ্চলিক পর্ব থেকে চার ক্যাটাগরিতে ২৫জন খুদে গণিতবিদদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তাদের পদক, টি-শার্ট ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা। বিজয়ী ২৫ জন ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জাতীয় গণিত উৎসবে অংশ নেবে।
# প্রাইমারী ক্যাটাগরি ঃ কক্সবজার বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল অ্যান্ড কলেজের আহমেদ ওয়াসিক রশিদ, বান্দরবানের লামা বসকো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ, মাঝিরকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তাজওয়ার নূর রৌহা, পানেরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রেজওয়ানা মাহমুদ রাইসা, বিয়াম র্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাদিয়া শাদ নানজিবা, ডি-ওয়ার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আতিয়া তাকওয়া এবং কক্সবাজার হলিচাইল্ড স্কুলের তাসনিয়া হোসাইন।
# জুনিয়র ক্যাটাগরি ঃ
লামা কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের এম জুনাইদ আহমেদ ভুঁইয়া, চকরিয়া গ্রামার স্কুলের ফারিহা আকতার পৌষী, কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের আফরা মাহমুদ, লামা কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাবলু মারমা, বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ঐশ্বর্য চক্রবর্তী পূর্ণা, বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সৃজন পরাগ, লামা কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের বশির আহমেদ এবং বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাজিউল জাইদ পুশান।
# সেকেন্ডারি ক্যাটাগরি ঃ
কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের কামরুল হাসান আবির, বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের মো. আতিক শাহরিয়ার, লামা কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজের মং থুই নু মারমা, কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মো. রিফাত রহমান, কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাশরুর হাসান লাবিব, কক্সবাজার হাশেমিয়া কামিল মাদ্রাসার মোহাম্মদ ওমর ফারুক, কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের খালেদ বিন রশিদ এবং জারাইলতলী হাইস্কুলের আলী জুনায়েদ।
# হাইয়ার সেকেন্ডারি ঃ
কক্সবাজার সরকারি কলেজের আনাস বিন আলম আলভি এবং লামা কোয়ান্টাম কসমো স্কুল অ্যান্ড কলেজ।
পাঠকের মতামত: