:: এম.আর মাহমুদ ::
বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে যারা নির্মম ভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করেছে তারাও বুয়েটের ছাত্র। বহিরাগত কেউ আবরারকে হত্যা করেনি। এ ধরণের একজন মেধাবী ছাত্রকে নির্মম ভাবে হত্যার কোন যুক্তি আছে কিনা এ সভ্য সমাজে কেউ বলতে পারবেনা। আবরার একজন শতভাগ দেশ প্রেমিক বলে ভারতের সাথে অসম চুক্তির প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দেয়। যে কারণে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সুর্য্য সন্তানেরা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। শিবির কর্মী হিসেবে সন্দেহ করে এ হত্যা কান্ড ঘটিয়েছে বুয়েটের ছাত্রলীগের পদ-পদবীধারী কিছু নেতা কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে আবরার এর পিতা বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ এজাহারভুক্ত অন্তত ১০জনকে গ্রেফ্তার করেছে। ছাত্রলীগ ইতিমধ্যে ঘটনায় জড়িতদের দল থেকে বহিষ্কার করেছে। আবরার এর পরিবার আওয়ামী সমর্থক। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে আবরার এর মুখের দাড়ি ছিল, ৫ ওয়াক্ত নামাজও পড়ত। সেই হিসেবে আবরারকে শিবির এর কর্মী হিসেবে সন্দেহ করার যথেষ্ট যুক্তি আছে। অন্যদিকে ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস দেয়াটা তার জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। কথায় আছে বিষাক্ত সাপের লেজ দিয়ে কান পরিষ্কার করার মত সাহস আবরার দেখিয়ে দেশ প্রেমিক হিসেবে প্রাণ দিয়ে নজির স্থাপন করেছে। যদিও কবি গুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে হয় “মরিতে চাহিনা আমি এই সুন্দর ভুবনে মানবে মাঝে বাঁচিবারি চাই”। কিন্তু ছাত্র রাজনীতির বলির পাঠা হিসেবে মেধাবী ছাত্র আবরারকে বুয়েটের ছাত্রাবাসের স্থাপন করা টর্সাল সেলে প্রাণ দিতে হল। এক্ষেত্রে কবি গুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিপরীত ভাষায় বলতে হয় “বাচিতে চাহিনা আমি বাক স্বাধীনতাহীন ভুবনে, দানবের মাঝে আমি বাচিবারই নাহি চাই”। আবরার অকাতরে প্রাণ দিয়ে প্রমাণ করেছে সে মরেনি, হয়তো ইতিহাসের পাতায় আবরার অমর হয়েই থাকবে। সারাদেশে আবরার এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করেছে জাতী সংঘ। তবে অপরাধীদের কোন চাড় সরকার দেয়নি। বিচার প্রক্রিয়ায় কি হয় তা দেখার বিষয়। কারণ, মুখে দাড়ী থাকার অপরাধে বিশ্বজিতকে কুপিয়ে হত্যার দৃশ্য জাতী দেখেছে। তাদের বিচার কি হয়েছে, তা সকলেই জানে। একজন অভিভাবক মাথার ঘাম পায়ে পেলে তার সন্তানকে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ পর্যন্ত নিয়ে যায়। সেখান থেকে লাশ হয়ে বাবার কাধে চড়ে কবরে যাওয়ার যন্ত্র কিযে বেধনাদায়ক আবারার এর পিতা-মাথা চাড়া কারো পক্ষে বুঝা সম্ভব নয়। সবচাইতে দুঃখজনক হচ্ছে আবরার এর মত একজন মেধাবী ছাত্র নির্মম ভাবে নির্যাতিত হয়ে প্রাণ হারানোর পরও বুয়েটের ভিসি মহোদয় তার প্রতিষ্ঠানের ছাত্রটির মরদেহ দেখতে গেলনা। মা-বাবাকে শান্তনা দেয়ার সৌজন্যবোধটাও তিনি দেখালেননা। এসব দলকানা ভিসিদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া ভিন্নমতের ছাত্র-ছাত্রীরা কি নিরাপধ। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নিদেশে কেসিনো বিরোধী অভিযান চালিয়ে দেশ-বাসীর মন জয় করেছে। ইতিমধ্যে অনেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটকা পড়েছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুজন দায়িত্বশীল নেতাকে ইতিমধ্যে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। যুবলীগের অবস্থা ত্রাহীমধুসুদন। অনেকে বিদেশ থেকে দেশে ফিরছেনা। আবার দেশ থেকে অনেকে পালিয়ে যাওয়ার ফন্দি ফিকিরে ব্যস্ত। মুল দলের অনেক রাগব বোয়াল এখন পা ভাঙ্গা মুরগির মত অবস্থায়। জাতী অপরাধীদের বিচার দেখে যেতে চায়। ছাত্র সমাজ রাস্তায় নেমে পড়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের দমনে তৎপর। এপথে গিয়ে সংঘাত বাড়ানোর চাইতে অপরাধীদের টেকনাপে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মত ক্রস ফায়ারের মত তড়িৎ বিচারের ব্যবস্থা করলে দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে বলে আমজনতার অভিমত। এক্ষেত্রে একটি কথা না বললে হয়না, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়ার অনাকাংখিত মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন মরহুম বিচারপতি আব্দুচ ছাত্তার, ওই সময় সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আবুল কাসেমের বাড়ী থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী ইন্দুকে গ্রেফ্তার করেছিল পুলিশ এ ঘটনারপর সাবেক সেনা প্রধান এইচ.এম এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে নিয়েছিল। বর্তমানে যেসব ঘটনা প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে তা দেখে বিজ্ঞ জনেরা সংকিত হয়ে পড়ছে। মুল কথা হচ্ছে অগণতান্ত্রিক বা সামরিক সরকারের চাইতে নিকৃষ্ট গণতন্ত্র উত্তম। অতএব মন্তব্য নি®প্রয়োজন।##
পাঠকের মতামত: