ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

অবাধে বালু তোলায় হুমকিতে চকরিয়ার রাবার ড্যাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার অর্ধশতাধিক স্পটে নদী-খাল থেকে বালু উত্তোলনসহ উপকূলীয় এলাকার ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি থেকে মাটি লুটের মহোৎসব চলছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে হুমকির মুখে পড়েছে মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা ও পালাকাটা পয়েন্টের দুটি রাবারড্যাম।

দায়িত্বশীল সূত্রের দাবি, মাতামুহুরী নদীর অসংখ্য পয়েন্টে বালু উত্তোলনের মেশিন বসিয়ে দিন-রাত সমানে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নদীর দু’পাড় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের ফলে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। নির্বিচারে বালু উত্তোলনের কারণে নদীতে সৃষ্টি হচ্ছে অসংখ্য চোরাবালু।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও কৃষি জমির মাটি কেটে নেওয়ার ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহাতুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে বালু উত্তোলনের মেশিন ও পাইপ যব্ধ করা হয়েছে। এখনও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সরকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে চকরিয়া ও পেকুয়ার অন্তত ৩০ হাজার একর জমির ইরি-বোরো চাষ নিশ্চিত করার জন্য মাতামুহুরী নদীর বাঘগুজারা ও পালাকাটা পয়েন্টে দুটি রাবার ড্যাম নির্মাণ করেছে। পালাকাটা রাবার ড্যামের সওদাগরঘোনা পয়েন্টে বালু উত্তোলনের জন্য কে বা কারা চারটি অত্যাধুনিক ড্রেজার এনে রেখেছে। এসব ড্রেজার রাবার ড্যামের ওপর দিয়ে পার করা হলে রাবারব্যাগ ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিরিংগা শাখার কর্মকর্তা (এসও) সালমান জানান, এসব ড্রেজার রাবার ড্যামের ওপর দিয়ে পার করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। তবে কারা চাপ প্রয়োগ করছে, তা প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছেন না তারা।

স্থানীয়দের দাবি, ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী এক জনপ্রতিনিধির সহযোগিতায় সদ্য নির্বাচিত সাহারবিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নবী হোছাইন ড্রেজারগুলো ভাড়া করে এনেছেন বালু উত্তোলনের জন্য।

এ ব্যাপারে নবী হোছাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারি একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সংশ্নিষ্ট ঠিকাদার ড্রেজারগুলো ভাড়া করে এনেছে। তবে জনস্বার্থ পরিপন্থি হলে ড্রেজারগুলো রাবার ড্যামের ওপর দিয়ে ঢুকানো হবে না।

এ দিকে রাবার ড্যাম ডিঙিয়ে এলাকায় চারটি ড্রেজার বালু উত্তোলনের জন্য আনার খবরে কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, ড্রেজার ঢুকিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হলে বোরো চাষ ও পরিবেশের বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে।

পাঠকের মতামত: