ঢাকা,সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

অনিয়ম-দুর্নীতিতে জর্জরিত রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিনিধি, রামু ::
যথাযথভাবে পালন করা হয়নি। তাছাড়া মহান স্বাধীনতা দিবসে স্কুলের শিক্ষর্থীরা কোনরূপ ডিসপ্লে প্রদর্শন করেনি। ২০২৩ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে কোন ধরণের শিক্ষার্থী, যোগ্য শিক্ষকদের মাপকাঠি নির্ণয়ের জন্য কোন ধরণের প্রতিযোগী প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বিদ্যালয়ের আইসিটি ল্যাব ও কম্পিউটার ল্যাবের কার্যক্রম সন্তোষজনক নয়। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদ সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। বিদ্যালয় পরিদর্শনকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদের সরকারী অর্থ ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সরকারের আয়ন ব্যয়ন ও জনবল ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত ঘাটতি রয়েছে। আরো প্রতীয়মান হয়েছে যে, বিদ্যালয় অভ্যন্তরীন রাজনীতি ও পারিপার্শ্বিক অসহযোগিতামূলক আচরন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ও সহকর্মীদের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের অভাব সর্বোপরি দক্ষ নেত্বত্বের কারণে ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলের আইন শৃঙ্খলাসহ পড়া লেখার মানের যথেষ্ট অবনতি হচ্ছে। সরকারি একজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ/পদায়নের মাধ্যমে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বৃদ্ধির সহায়ক হবে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুর আহমদ নিজেও বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি ভালো নেই বলে মন্তব্য করেন। জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন- এটা জানতে হলে স্কুলে যেতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ও তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। বিদ্যালয়ে নিয়মিত আয়-ব্যয়ের হিসাব না থাকার বিষয়েও তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন কার্ডসহ বিভিন্ন ভুল সংশোধন প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন- রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি মোটেও ভালো নেই। বিদ্যালয়ে আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অদক্ষতার কারণে এসব পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও সবসময় দলাদলিতে জড়িয়ে পড়ে। যে কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। সম্প্রতি তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে বিদ্যালয়ে সৃষ্ট এসব অনিয়ম তদন্ত করেছেন। তদন্তে যে সব অনিয়ম ও সমস্যা চিহ্নিত হবে তা শীঘ্রই সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রাশেদুল ইসলাম জানিয়েছেন- ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অবহেলা, অদক্ষতার কারণে এ বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। বিদ্যালয়ের যাবতীয় অনিয়ম-দুর্নীতি ও অন্যান্য অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। পবিত্র রমজান মাসের মধ্যে বিদ্যালয়ের বিরাজমান এসব সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আবুল কালাম জানান, দীর্ঘদিন একজন পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষকের অভাবে সদ্য জাতীয়করণকৃত শতবর্ষী বিদ্যালয়টির একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড দিন দিন অবনতি হচ্ছে। ইতিপূর্বে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ অতিদ্রুত সরকারিভাবে অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে একজন প্রধান শিক্ষক বা একজন সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব প্রদান করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সর্বসম্মতিক্রমে লিখিত আবেদন জানিয়েছিলো। শিক্ষক পরিষদ মনে করে একজন দক্ষ ও সৃষ্টিশীল প্রধান শিক্ষক না আসা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে বিরাজমান সমস্যার সমাধান হবে না ।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন যোগ্য প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতি, শিক্ষকদের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ হ্রাস, প্রশাসনিক ক্ষেত্রে চরম অব্যবস্থাপনা ও নানা অনিয়মের কারণে জেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টির লেখাপড়ার মান বর্তমানে ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যালয়টির এমন নাজুক অবস্থা দেখে সকল অভিভাবক ও রামুবাসী হতাশ ও উদ্বিগ্ন। এ কারণে সহসা একজন পূর্ণাঙ্গ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করে বিদ্যালয়টিকে ধ্বংসের হাত থেকে।

পাঠকের মতামত: